নিজস্ব প্রতিনিধি: বাম জমানায় রাজ্য রাজনীতিতে সেভাবে টলি তারকাদের সরাসরি ভোটের লড়াইয়ে দেখা যেত না। এমনকি তাঁদের দেখা যেত না দলের মঞ্চে বা কর্মসূচীতেও। কিন্তু তৃণমূলের জমানায় সেই ছবি পুরো বদলে গিয়েছে। বরঞ্চ জোড়াফুলের হাত ধরে একের পর এক টলি নায়ক বা নায়িকারা পা রেখেছেন বাংলার রাজনীতিতে। এদের কেউ ভোটে দাঁড়িয়েছেন, কেউ বা দাঁড়াননি, কেউ আজও তৃণমূলে(TMC) আছেন, কেউ বা বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। কিন্তু আজও টলি স্টার দেব(Dev) রয়ে গিয়েছেন জোড়াফুলেই। আর তিনি যে ইচ্ছা করলেই জোড়াফুলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছাড়তে পারবেন না সেটা এদিন খোলা মঞ্চে সাওহ জানিয়ে দিলেন খোদ দলনেত্রী। বলে দিলেন, ‘যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক, আমরা তোমায় ছাড়ব না।’ শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলার পিংলাতে(Pingla) দেবের সমর্থনে আয়োজিত সভা থেকে এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
রাজ্যে পরিবর্তনের পরে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল দেবকে প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র(Ghatal Constituency) থেকে। সেই থেকেই দেব ঘাটালের সাংসদ। তবে সেখানে তিনি লড়াই করেন দীপক অধিকারী নামে। এবারেও তৃণমূল দেবকে ঘাটাল থেকেই প্রার্থী করেছে। সেই কারণেই এদিন পিংলাতে দেবের সমর্থনে একটি জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভা থেকেই তিনি দেবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ঘটনাচক্রে এবারে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রেও তৃণমূল এক তারকাকে প্রার্থী করেছে। আর তিনি হলেন জুন মালিয়া। এদিনের সভা থেকে সেই কারণেই মমতা বলেন, ‘ঘাটালে দেব অনেক কাজ করে। বন্যার সময় এখানে ও নিজে এসে কাজ করেছে, নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছে। ও আজ ভাল বলেছে। দেব আমার প্রিয় প্রার্থী। আমি দেখছি, ও একজন ভাল রাজনীতিবিদ হয়ে উঠছে। এখানে দেব আর জুন যদি জেতে, তবে এই মেদিনীপুরকে আর ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। মেদিনীপুরকে আমি ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান উপহার দেব।’
এর পাশাপাশি মমতা এদিন বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ির টাকার প্রথম কিস্তি আর তার তিন চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয় কিস্তি দেব। ১ লক্ষ বিশ হাজার টাকা দিয়ে দেব। বাড়ি বানিয়ে নেবেন। উন্নয়নে অনেক এগিয়ে বাংলা। উন্নয়নে বাংলার সঙ্গে পৃথিবীর কেউ পারবে না। পৃথিবীর সেরা বাংলা। ৬৭টা প্রকল্প আমরা চালাই। ছোট থেকে বড়, জন্ম থেকে মৃত্যু, সব কিছুই জন্যই আছে কোনও না কোনও প্রকল্প। আমরা কর্মশ্রী চালু করছি। ৫০ দিনের কাজের গ্যারান্টি দিয়ে গেলাম। জব কার্ড হোল্ডাররা কাজ পাবেন। টাকাও বাংলার সরকার দেবে। তাতে ৫০ দিনের জায়গায় ৬০ দিন কাজ করলেও টাকা পাবেন। অ্যাকাউন্টে টাকা সরাসরি যাবে। আমরা ৪৩ লক্ষ বাড়ি এই ১২ বছরে করে দিয়েছি। ১১ লক্ষ লোকের বাড়ির লিস্ট এখনও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পরে আছে। কিন্তু ওরা তাঁদের বাড়ি করে দেয়নি। ৩৫০টা কেন্দ্রীয় টিম বাংলায় এসেছে। তদন্ত করেছে। রিপোর্ট চেয়েছে। বলছে পরে ঘর দেব। কিন্তু, বাংলার মানুষ মাথা নত করে না। এই বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১১ লক্ষ মানুষের বাড়ি প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে দেব। আরও তিন চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয় কিস্তি মোট ১ লক্ষ ২০ টাকা করে দিয়ে দেব। ঘর নিজেরা তৈরি করে নেবেন। বাংলার বাড়ি। কারও দয়া পেতে হবে না। দয়া চাইতে হবে না।’