নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের প্রথম সারির সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম কুমার শানু। নব্বই দশকের বলিউড কাঁপানো সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন তিনি। তাঁর কন্ঠের একাধিক আইকনিক গানে ঠুমকা তুলছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। সিনেপ্রেমিদের কাছে কুমার শানু আজও নস্টালজিক। রোমান্স হোক দুঃখ হোক সবেতেই তাঁর গান আজও মৃদু দোলা দেয় অনুরাগীদের মনে। এমনও হয়েছে, একবার তিনি একদিনে ২৮টি রেকর্ড করেছিলেন। তাঁকে ছাড়া সুরকাররা অন্য কাউকে কল্পনা করতে পারেননি। যেহেতু তাঁর বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। তাই একদিনের ২৮ টি গানের রেকর্ড করতে বাধ্য হয়েছিলেন শিল্পী। কিন্তু বর্তমানে তাঁর ডিম্যান্ড ফুরিয়ে এসেছে, নতুনদের ভিড়ে পুরনোরা হারিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি একটি বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন কুমার শানু। জানালেন, বলিউডের আইকনিক ‘1942: এক প্রেম কাহিনী’-ছবির জনপ্রিয় গান ‘এক লড়কি কো দেখা তো আইসা লাগা’-গানটি রেকর্ড করার পর ছবির সঙ্গীত রচয়িতা আরডি বর্মন, তাঁকে ব্যাপক গালিগালাজ করেছিলেন।
একটি নতুন সাক্ষাৎকারে, গায়ক স্মৃতি টেনে বলেন, কীভাবে প্রয়াত সংগীতশিল্পী তাঁকে গানটির প্রতিটি লাইন হিট হওয়ার জন্য আলাদাভাবে গাইতে বলেছিলেন। গানটির রেকর্ডিংয়ের শেষে কুমার শানুর কন্ঠে এই গানটি শুনে ব্যপক উল্লসিত হন আরডি বর্মন এবং আনন্দে আলিঙ্গন করে, গায়কের কপালে চুম্বন করেন এবং মজার ছলে গালি দিতে শুরু করেন। এটাই আসল ঘটনা! আনন্দের চোটে গায়ককে গালি দিয়ে ফেলেছিলেন আরডি বর্মন। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে অভিনয় করেন, অনিল কাপুর, মনীষা কৈরালা, জ্যাকি শ্রফ, অনুপম খের, ড্যানি ডেনজংপা এবং প্রাণ। আর ডি বর্মন চলচ্চিত্রটির জন্য সঙ্গীত রচনা করে ছিলেন এবং গানের কথা লিখেছিলেন জাভেদ আখতার। তবে মৃত্যুর আগেএটি ছিল আরডি বর্মনের শেষ প্রজেক্ট, ছবিটি মুক্তির আগেই মারা যান আর ডি বর্মন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কুমার শানু আরও বলেছেন, “পঞ্চম দা (আরডি বর্মন, তাঁর শেষ ছবির কাজ) গানের আসরে এসে আমাকে বললেন, ‘দেখুন এই গানটিতে অনেক ‘জায়সে’ শব্দ রয়েছে। যাইসে শায়ের কা খাওয়াব, যাইসে উজলি কিরণ, যাইসে বান মে হিরণ…।’ তিনি আমাকে বললেন, আমি চাই ‘জাইসে’-এর প্রতিটি উল্লেখ একে অপরের থেকে আলাদা হোক। একই ধরনের শব্দ হওয়া উচিত নয়।’ তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি যদি প্রতিটি ‘জাইসে’ স্বতন্ত্রভাবে গাইতে পারি, তবে আমার গানটি হিট হবে! এরপর আমি শব্দটিকে আলাদাভাবে গাওয়ার চেষ্টা করেছি এবং গানটি হয়ে গেছে হিট! পঞ্চম দা’র চিন্তাভাবনা দুর্দান্ত ছিল৷ তিনি একজন স্বপ্নদর্শী ছিলেন৷”
গানটির জন্য, কুমার শানু শ্রেষ্ঠ পুরুষ প্লেব্যাক গায়কের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছিলেন। এই গানটি ছাড়াও, গায়ক রিমঝিম রিমঝিম রুমঝুম রুমঝুম, রুথ না জানা, এবং কুছ না কাহোর মতো একাধিক চলচ্চিত্রের কয়েকটি গানে তাঁর কণ্ঠ দিয়েছিলেন। আরডি বর্মণ তিসরি মঞ্জিল (1966), বাহারন কে সহ অনেক চলচ্চিত্রে সঙ্গীত রচনা করেছিলেন। স্বপ্নে (1967), পেয়ার কা মৌসুম (1969), ইয়াদন কি বারাত (1973), পড়োসান (1968), এবং কাটি পাতং (1970)। তিনি হরে রাম হরে কৃষ্ণ (1971), সীতা অর গীতা (1972), শোলে (1975) এবং আন্ধি (1975), গোল মাল (1979), এবং খুবসুরাত (1980) এর সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন।