নিজস্ব প্রতিনিধি: গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ নিজের বান্দ্রার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন বলিউড ডিভা মালাইকা অরোরার বাবা অনিল মেহতা। তাঁর মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই মর্মাহত অভিনেত্রী পরিবার থেকে তাঁর ভক্তরা সবাই। খুব ছোট বয়সেই বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ দেখেছেন মালাইকা-অমৃতা অরোরা। ভালবেসে খ্রিস্টান জয়েশকে বিয়ে করেছিলেন অনিল অরোরা। কিন্তু মালাইকার যখন ১২ বছর বয়স তখন বিচ্ছেদ হয়ে যায় মালাইকার বাবা-মায়ের। মায়ের কাছেই মানুষ মালাইকা এবং তাঁর বোন অমৃতা অরোরা।

অনিল মেহতার মৃত্যু পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে নাড়া দিয়েছে। ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ৯টার দিকে আয়েশা ম্যানর বিল্ডিংয়ের বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অনিল। তিনি ওই বিল্ডিংয়ের ষষ্ঠ তলায় থাকতেন। জানা গিয়েছে, অনিল অরোরা অসুস্থ ছিলেন এবং মন খারাপও ছিলেন। মৃত্যুর সকালে অনিল তার মেয়ে মালাইকা অরোরা এবং অমৃতা অরোরার সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। তিনি তাদের দুজনকেই বলেছিলেন যে তিনি তাঁর জীবনের প্রতি বিরক্ত। কিন্তু কি কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি, অবশেষে সামনে এলো মালাইকার বাবার মৃত্যুর কারণ। অনিল অরোরার আত্মহত্যার খবর পাওয়ার পরেই তাঁর বাড়িতে পৌঁছয় মুম্বই পুলিশ।

এমনকী মালাইকার ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা, তাঁর প্রাক্তন স্বামী আরবাজ খান এবং বর্তমান প্রেমিক অর্জুন কাপুরও সেখানে পৌঁছয়। ফরেনসিক দলও তার পিছু নেয় সেখানে। অনিলের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এখন পোস্ট মর্টেম সংক্রান্ত বিশদ বিবরণও প্রকাশিত হয়েছে। এতে তার মৃত্যুর মূল কারণ উদঘাটন হয়েছে। গতকাল রাত ৮টার দিকে অনিল মেহতার ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পরে, অনিল অরোরার মৃত্যুর বিষয়ে বেশকিছু তথ্য উদ্ঘাটন হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একাধিক আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে অনীলের। ময়নাতদন্তের পর অনিলের মৃতদেহ মালাইকা অরোরার পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়। আজ তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

মালাইকা অরোরা এবং তার পরিবার অনিল অরোরার মৃত্যুতে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করে বলেছেন, “আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের স্নেহশীল বাবা অনিল কুলদীপ মেহতা আর নেই। তিনি একজন নম্র মানুষ, একজন ভাল দাদা, একজন প্রেমময় স্বামী এবং আমাদের সেরা বন্ধু ছিলেন। আমাদের পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আমরা এই কঠিন সময়ে মিডিয়া এবং আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে গোপনীয়তার অনুরোধ করছি। আমরা আপনার বোঝাপড়া, সমর্থন এবং সম্মানের প্রশংসা করি। ধন্যবাদ, জয়েস, মালাইকা, অমৃতা, শাকিল, আরহান, আজান, রায়ান, ক্যাস্পার, ডাফি, বাডি।” অনিল যখন আত্মহত্যা করেন, মালাইকার মা বাড়িতেই ছিলেন। অনিল তার দুই মেয়েকে জানিয়েছিলেন যে তিনি অসুস্থতায় ভুগছেন।

এরপর একই দিনে সিগারেট খাওয়ার নামে বারান্দায় গিয়ে আত্মহত্যা করে। বান্দ্রার আয়েশা ম্যানর বিল্ডিংয়ের ষষ্ঠ তলায় থাকতেন অনিল। মালাইকা আরোরার মা জয়েসও একই ভবনের একই তলায় থাকেন। ১১ সেপ্টেম্বর সকালে অনিল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেনি বলে জানিয়েছেন মালাইকার মা। এই ছিল তাদের দুজনের নিত্যদিনের রুটিন। এ কারণে তিনি অনুভব করেছিলেন যে কিছু ভুল হয়েছে। অনিলের আকস্মিক মৃত্যুতে মালাইকা অরোরা এবং তার পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। বাবার আত্মহত্যার সময় পুনেতে ছিলেন অভিনেত্রী। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মুম্বাই আসেন এবং তারপর থেকে তার পরিবারের সঙ্গে আছেন। অনিলের শেষকৃত্য আজ অর্থাৎ ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।