নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ধুমধাম করে বিয়ে করা, ছেলের জন্ম, ঘটা করে জন্মদিন পালন, ছেলে রাজ্যর হাতে কেক কাটা, বিভিন্ন সময়ে রকমারি মুডে ধরা দেন ঢালিউডের জনপ্রিয় এবং চর্চিত অভিনেত্রী পরীমণি। প্রতিনিয়ত খবরের শিরোনামে থাকেন এই অভিনেত্রী। কিছুদিন আগেই স্বামী শরিফুল রাজ এবং অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমকে ঘিরে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন পরীমণি। অভিনেত্রীর কথায় বোঝা যায়, হয়তো অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছেন দুজনে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায়। তবে এখন সবটাই কুল।
তবে অভিনেত্রীর জীবন থেকে এখনও ঝামেলা মুক্ত হয়নি। গত বছর ঢাকা বোট ক্লাবে শ্লীনতাহানির শিকার হয়েছিলেন পরীমণি। সেই অভিযোগেই মামলা করেছিলেন নায়িকা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পরীমণিকে নিয়ে গোটা বাংলাদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। ঢাকা উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে গত বছর জুনে মামলা দায়ের করেছিলেন নায়িকা। সেই মামলার প্রতিটি শুনানিতেই প্রেগনেন্সি অবস্থাতেই আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন পরীমণি।
গত ১ আগস্ট ছিল মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের শেষ তারিখ। শুনানির তারিখ নভেম্বরে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই কারণেই আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার স্বামী শরিফুল রাজকে সঙ্গে নিয়েই আদালতে উপস্থিত হন নায়িকা। জবানবন্দিতে পরীমণি তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানির বর্ণনা দেন। জবানবন্দিতে পরীমণি আরও জানান, নাসির ও তাঁর সহযোগীরা ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন পরীমণির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। তবে পরীমণি তাঁর জবানবন্দি সম্পূর্ণ করতে না পারায় তাঁকে আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে তাঁর বাকি জবানবন্দি গ্রহণ করার জন্যে। শুনানির সময় তিন অভিযুক্তর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শাহ শহিদুল আলম। তবে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ছিলেন না।
প্রসঙ্গত, ২০২১, ৮ জুন রাতে নায়িকাকে কৌশলে ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন তুহিন নামে একজন অভিযুক্ত। যদিও তুহিনের সঙ্গে পরীমণির আগে থেকেই পরিচয় ছিল। অভিযোগ ওঠে, ঢাকা বোর্ড ক্লাবে পরীমণিকে ডেকে নিয়ে সেখানে তাঁকে জোর করে মদ খাওয়ানো হয়, এরপরেই তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়এরপর গতবছর ১৪ জুন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসির, অমি ও অজ্ঞাত ৪ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পরীমনি। এই মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর নাসির, শহিদুল ও তুহিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। একটি গোয়েন্দা দল ওইদিনই উত্তরার ১ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নাসির ও অমিকে গ্রেফতার করেন। অভিযুক্তরা আড়াই মাস জেলে ছিলেন।