নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘আদিপুরুষ’ নির্মাতাদের এবার চরম তুলোধনা করল লখনউ হাইকোর্ট। মুক্তির আগে থেকেই ‘আদিপুরুষ’ নিয়ে ঝামেলা অব্যাহত। প্রথমে ছবির VFX-বদলানোর দাবি উঠলে নির্মাতারা তা বদলিয়ে ৬ মাস পরে ছবি রিলিজ করে। কিন্তু ছবি রিলিজ হতেই বিতর্ক চরমে ওঠে। হিন্দুধর্মের পৌরাণিক ধর্মগ্রন্থ ‘রামায়ণ’-এর আধুনিক সংস্করণ আদিপুরুষ। প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ নিয়ে সিনেমা করার প্রবণতা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। কিন্তু আগেকার যুগে ধর্মগ্রন্থের আদে তৈরি ছবির মধ্যে যথেষ্ট শ্রদ্ধা থাকতো। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারসাজি করে ধর্মগ্রন্থের সিনেমার প্রেক্ষাপটই বদলে দিচ্ছে। যা কিনা রীতিমতো অপমানের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।
যেমন, আদিপুরুষ। ছবির সংলাপ, ভগবান রামের ভূমিকায় প্রভাসের কন্ঠে ভুলভাল সংলাপ, সীতার বেশে কৃতি শ্যাননের পরণে ওয়েস্টার্ন পোশাক, হনুমানের চরিত্রের ভুলভাল আপত্তিকর সংলাপ পাঠ, সবটা নিয়েই দেশে রীতিমতো তাণ্ডব চলছে। হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত এনেছে ছবি, সঙ্গে ভগবান দের মুখে এই ধরণের সংলাপ শোনাও পাপ। চিত্রনাট্যকার মনোজ মুনতাশির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফাঁদে পড়ে নির্মাতারা সংলাপ বদলালেও বিতর্ক থামার নাম নেই। অবিলম্বে ছবির প্রদর্শনী বন্ধের ডাক গোটা দেশজুড়ে। এদিকে আজ লখনউ হাইকোর্টের বিচারপতি রাজেশ সিং চৌহান এবং বিচারপতি শ্রীপ্রকাশ সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ আদিপুরুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের শুনানিতে, চরম ভৎর্সনা করল সেন্সর বোর্ড এবং প্রযোজক পরিচালকদের।
আদালতে বিতর্ক শুনানি চলাকালীন আইনজীবী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী চলচ্চিত্রটিতে দেখানো আপত্তিকর ঘটনা ও সংলাপ সম্পর্কে মাননীয় আদালতকে অবহিত করেছেন। ২২ জুন আদালতের দেওয়া সংশোধনী আবেদন গ্রহণ করে সেন্সর বোর্ডের পক্ষে উপস্থিত অ্যাডভোকেট অশ্বিনী সিংকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, সেন্সর বোর্ড এ কী করছে? সিনেমা সমাজের দর্পণ, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কী শেখাতে চান? সেন্সর বোর্ড কি তাঁর দায়িত্ব এখনও বুঝতে পারেনি? আদালত আরও বলেছে যে, ‘শুধু রামায়ণ নয়, অন্তত পবিত্র কোরান, গুরু গ্রন্থসাহেব এবং গীতার মতো শীর্ষমানের হিন্দুধর্মীয় গ্রন্থ নিয়ে ছেলেখেলা করা বন্ধ করুন।’ আদালতে ছবিটির প্রযোজক, পরিচালক ও অন্যান্য অভিযুক্তের অনুপস্থিতির বিষয়েও কঠোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাবণের দ্বারা বাদুড়কে মাংস খাওয়ানো, ব্লাউজ ছাড়া সীতা জিকে দেখানো, কালো রঙের লঙ্কা, বাদুড়কে রাবণের বাহন বলা, বিভীষণের স্ত্রীকে সুশেন বৈদ্যের পরিবর্তে লক্ষ্মণকে সঞ্জীবনী দেওয়া, আপত্তিকর কথোপকথন সবটা নিয়েই আদালতে অভিযোগ পেশ করা হয়েছিল। এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ২৭ জুন।