নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রবীণ অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। কয়েক যুগ ধরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে রাজ করে চলেছেন অভিনেত্রী। মহানায়ক উত্তমকুমারের সময় থেকেই বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেত্রীর দাপট চলছে। যদিও মাস কয়েক আগে পর্যন্তও তিনি পুরোদমে সিরিয়ালে কাজ করছেন। কিন্তু বহুদিন ধরেই অভিনেত্রীর দেখা মিলছিল না ছোটপর্দায়। তখন থেকেই ভক্তরা উদ্বিগ্ন! বর্তমানে সিরিয়ালে মা-ঠাকুমা-পিসি-মাসি শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করতেন বাসন্তী দেবী। তাঁর অভিনয়ও স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত প্রশংসিত। বর্তমানে তাঁর বয়স হয়েছে ৮৬ বছর। এই বয়সেও দাপিয়ে অভিনয় করে যাচ্ছিলেন তিনি। তাঁকে শেষবার স্টার জলসার ‘গীতা LLB’ সিরিয়ালে দাপুটে আইনজীবীর চরিত্রে শেষ দেখা গিয়েছিল।
সিরিয়াস, কমিক–সব চরিত্রেই তিনি সমান মানানসই। কিন্তু সপ্তাহ কয়েক আগে আচমকাই শোনা গিয়েছিল, হাসপাতালে ভর্তি বাসন্তী দেবী। চলে গিয়েছেন কোমায়। এই সময়ে পাশে নেই তাঁর বাড়ির কেউ। আর্থিক দিকেও স্বচ্ছ্বল নয় তিনি। এখন কেমন আছেন তিনি? সূত্রের খবর, এখনও হাসপাতালে শয্যাশায়ী বাসন্তীদেবী। ICU-তে চিকিৎসাধীন। একটি কিডনি খারাপ হয়ে গিয়েছে তাঁর। কিন্তু চমকপ্রদ খবর এটাই যে, এক কন্যা এক পুত্র থাকা সত্ত্বেও, অভিনেত্রীর ফিক্স ডিপোজিট ভেঙে, লোকের কাছে পয়সা ধার করে তাঁর হাসপাতালের বিল মেটাতে হয়েছে। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীর গাড়ির চালক মলয় চাকি বলেছেন, বাসন্তীদেবীর ঘনঘন শরীর ফুলে যায়। শরীরে জল জমে যায়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর জানা যায় একটা কিডনি খারাপ হয়ে গিয়েছে তাঁর। সেই সঙ্গে রয়েছে নানাবিধ বার্ধক্যজনিত সমস্যাও রয়েছে। সরস্বতী পুজোর আগে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন বাসন্তীদেবী।
এতদিনে হাসপাতালে বিল হয়েছে ২ লাখ টাকা। সেই টাকা বন্ধুবান্ধবের থেকে ধার করে হাসপাতালের বিল মেটাতে হয়েছে। বাসন্তীদেবী তাঁর দমদমের বাড়িতে একাই থাকেন। ছেলেমেয়ে কেউ দেখতে আসেনা। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শুধু তাঁর জামাই এসেছিলেন দেখা করতে। একদিন এসেছিলেন ছেলে-বউমা। কিন্তু শুধু দেখাটাই সার। কোনও খরচাপাতি দেননি মায়ের। নিঃসঙ্গতায় শেষ জীবন কাটছে তাঁর। তাঁর সঙ্গী তাঁর পরিচারিকা। তাঁর শারীরিক অসুস্থতা তাঁকে কাজ করার অনুমতিও দিচ্ছে না। তাই মলয়ও এখন তাঁর গাড়ি চালান না। কারণ তাঁর মাইনে দিতে পারছেন না বাসন্তী দেবী।
তবুও মলয়বাবু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেননি। মায়ের মতো দেখে সে। তাই হাসপাতালে ভর্তি করানোর থেকে সমস্ত দায়িত্ব অভিনেত্রীর গাড়ির চালক মলয়বাবুই নিয়েছেন। তবে এখন একটু ভাল আছেন বাসন্তীদেবী। উঠে বসতে পারছেন। কথা বলতে পারছেন। কিন্তু কথাগুলো জড়ানো। এদিকে অভিনেত্রীর ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় থেকে মৈত্রেয়ী মিত্র–সকলেই তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।