নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ছোট পর্দায় তিনি গুনগুনের বাবা। পর্দাতেই নয় বাস্তবেও দারুণ সম্পর্ক ছিল বাবা-মেয়ের। অর্থাৎ অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ও তৃণা সাহার। দারুণ বন্ধুত্ব ছিল সহঅভিনেত্রী মালবিকা সেনের সঙ্গে। সহকর্মীকে হারিয়ে রীতিমত শোকে মুহ্যমান সকলেই। বিস্ময় প্রকাশ করেছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ও।
খড়কুটো’ ধারাবাহিকে কাজের সূত্রে দারুণ সম্পর্ক তৈরি হয় অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ও অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী মালবিকা সেনের। সহকর্মীর মৃত্যু প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মালবিকা অত্যন্ত কাতর হয়েছেন। এ মৃত্যু তিনি মেনে নিতে পারছেন না। অভিষেক সম্পর্কে বলতে গিয়ে মালবিকা বলেছেন শুটিং ফ্লোরে সকলকে মাতিয়ে রাখতেন অভিষেক। কখনই টের পেতে দিতেন না যে তিনি অসুস্থ। ভীষণ আমুদে মানুষ ছিলেন একজন। সারাক্ষণ হই হুল্লোড় করে সবাইকে নিয়ে মেতে থাকতেন।
গত পরশুও তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছেন। শুট করেছেন একসঙ্গে। সেই সময়েই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। অনেকবার বমি করেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রীকে খবর দিলে তিনি এসে নিয়ে যান অভিষেককে। এতবছর কাজ করার পরেও ওঁর মধ্যে কোনও স্টারসুলভ আচরন ছিল না। সবাইকে নিয়ে মেতে থাকতে ভালবাসতেন। খুব সহজেই মিশে যেতে পারতেন মানুষের সঙ্গে।
গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে একসঙ্গে কাজ করছেন তৃণা ও অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। পর্দায় গুনগুনের ড্যাডি তিনি। অনস্ক্রিনের মতই অফ স্ক্রিনে তাঁদের ভীষণ ভালো সম্পর্ক। অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে রীতিমত ভেঙে পড়েছেন তৃণা। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, একেবারেই শরীরের যত্ন নিতেন না তাঁর পর্দার ড্যাডি। পরশু শেষ শুটিং করতে গিয়ে মারাত্বক অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তারের কাছে যেতে চাইতেন না একেবারেই। অনেকবার তাঁকে ডাক্তারের কাছে যেতে বলা হয়েছিল। অসুস্থতা বুঝতে দিতেন না।
স্টার জলসার বহু ধারাবাহিকে কাজ করেছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। টাপুর টুপুর, চোখের তারা তুই, ইচ্ছে নদী, অন্দরমহল, কুসুম দোলা, ফাগুন বউ প্রভৃতি জনপ্রিয় ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অভিনেতার প্রয়াণে স্মৃতিচারণা করেছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, গত দশ বছর ধরে তাঁদের প্রযোজনা সংস্থা ম্যাজিক মোমেন্টসে কাজ করছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝেই লম্বা ছুটি চাইতেন। এই নিয়ে খানিক বিবাদ হত। এবারেও সপরিবারে বেড়াতে যাওয়ার জন্য লম্বা ছুটি নেওয়া ছিল অভিষেকের। কিন্তু এমন ছুটি যে তিনি নিয়ে নেবেন তা ঘুণাক্ষরেও বোঝেননি কেউ।