নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউডের অন্যতম ব্লকবাস্টার হিট চলচ্চিত্র ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ আজও মানুষের স্মৃতিতে তাজা। ছবিতে প্রবীণ অভিনেত্রী জিনাত আমনের নজরকাড়া অভিনয় দক্ষতা আজও মানুষের মন জুড়ে রয়েছে। এই ছবিতে তাঁর পোশাক থেকে শুরু করে সংলাপ সবটাই ছিল আকর্ষণীয়। বিশেষ করে তৎকালীন বলিউডের অন্যতম সাহসী অভিনেত্রী ছিলেন, যিনি পর্দায় অনায়াসেই নিজেকে বিকিনি পরিয়ে সামিল করতে পারতেন।
কিন্তু জানেন কী, ছবিতে জিনাতের চরিত্র দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় হলেও তিনি এই ছবির জন্যে প্রথম পছন্দ ছিলেন না। হ্যাঁ, এই ছবিতে জিনাতের জায়গায় থাকার কথা ছিল প্রয়াত অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহার। কিন্তু তিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে শেষ পর্যন্ত এই ছবির প্রস্তাব যায় জিনাতের কাছে। প্রয়াত অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহাও তৎকালীন বলিউডের একজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ছিলেন। যার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের তালিকায় রয়েছে, রজনীগন্ধা, ছোট সি বাত-এর একাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।
এই চলচ্চিত্রগুলিতে তাঁর সংযত অভিনয়, সঙ্গে তাঁর পোশাক পরার দৃষ্টিভঙ্গি সবটাই দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। আসলে তাঁকে বেশিরভাগ ছবিতেই শাড়িতেই দেখা গিয়েছে। তাঁর কথায়, শুধু গ্ল্যামারাস পোশাকে আবদ্ধ হলেই যোগ্য অভিনেত্রী হওয়া যায় না, যোগ্যতা দরকার অভিনয়ের। ২০১৫ সালের একটি সাক্ষাৎকারে বিদ্যা শেয়ার করেছিলেন যে, তিনি বাসু চট্টোপাধ্যায়ের ১৯৭৪ সালের চলচ্চিত্র রজনীগন্ধার সেটে অভিনয়ের নৈপুণ্যতা শিখেছিলেন।
কিন্তু তাঁর কাছে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল, যখন রাজ কাপুর তাঁর একটি ছবিতে প্রধান ভূমিকার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অর্থাৎ সত্যম শিবম সুন্দরমে। কিন্তু রাজ জী র হলেও এই ছবি তিনি করতে চাননি। কারণ তিনি তাঁর চরিত্রের জন্যে বেছে নেওয়া পোশাক পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেননি। সত্যম শিবম সুন্দরম-এর প্রধান চরিত্র রূপাকে সামাজিক মানদণ্ড অনুসারে একজন ‘অতি-সুন্দর’ মহিলা হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। যিনি পরবর্তীতে যৌনতা বেছে নেন।
বিদ্যা তখন বলেছিলেন, “আমি সত্যম শিবম সুন্দরম নিইনি কারণ জিনাত আমানের মতো পোশাক পরতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করিনি। রাজজি (রাজ কাপুর) এবং আমার দাদা খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তিনি আমার দাদার সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করেছিলেন (দিল কি রানি, 1947)। তাঁর বাবা পৃথ্বীরাজও আমার দাদার সঙ্গে কাজ করেছিলেন (শ্রী কৃষ্ণার্জুন যুধ, 1945 সালে)। আমরা একে অপরকে সত্যিই ভাল করে জানতাম কিন্তু তবুও আমি তাঁকে বলেছিলাম যে আমি তাঁর ছবিতে অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব না।” তবে পরবর্তীতে তিনি ছবিটি প্রত্যাখ্যান করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর কথায়, “রাজ কাপুরের সঙ্গে কাজ করা প্রতিটি মেয়ের স্বপ্ন ছিল এবং তাই আমি এখনও তাঁকে না বলার জন্য আফসোস করি।”