এই মুহূর্তে




‘১৬ ঘণ্টা হাতকড়া পরিয়ে গরু-ছাগলের মতো ব্যবহার’, মার্কিন হেফাজত বিভীষিকাময় ফিলিস্তিনি নববধূর




নিজস্ব প্রতিনিধি: অভিবাসনের অভিযোগে আটক হয়েছিলেন টেক্সাসের ২২ বছর বয়সী একজন ফিলিস্তিনি মহিলা। মার্কিন কারাগারে ছিলেন ১৪০ দিন। যিনি সম্প্রতি একজন মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে মধুচন্দ্রিমা থেকে ফিরে আসার সময়ে মিয়ামি ইন্টার ন্যাশনাল বিমানবন্দরে তাঁকে আটক করেন মার্কিন ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট। এরপরেই মার্কিন কারাগারে রীতিমতো নরক যন্ত্রণা সহ্য করেন ওই মহিলা। সম্প্রতি এই মহিলা মার্কিন কারাগারে থাকাকালীন তাঁর বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার বিষয়ে মুখ খুলেছেন। সৌদি আরবে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি আদতে একজন ফিলিস্তিনি। তবে তাঁর কোনও দেশের নাগরিকত্ব ছিল না। অথচ তাঁকে অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কারাগারে তাঁর সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করা হয়ে ছিল। একেবারে গরু-ছাগলের মতো তাঁর সঙ্গে আচরণ করা হয়েছিল। চার মাসেরও বেশি সময় কারাবাসে আটকে থাকার পর, গত ৩ জুলাই তিনি অভিবাসন আটক থেকে মুক্তি পান। মুক্তির পর, তিনি তাঁর মিশ্র আবেগ প্রকাশ করেছেন।

একটি সংবাদমাধ্যমকে নিজের কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা শেয়ার করে জানিয়েছেন, ‘পাঁচ মাসের মধ্যে এটিই আমার প্রথমবারের মতো গাছ দেখা। রাষ্ট্রহীন থাকার অপরাধে আমি আমার জীবনের পাঁচ মাস হারিয়েছি, যার উপর আমার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। আমি রাষ্ট্রহীন থাকা বেছে নিইনি। আমি এমন কোনও অপরাধ করিনি যা আমাকে রাষ্ট্রহীন করে তুলেছে। আমার কোনও বিকল্প ছিল না। আমি কেবল রাষ্ট্রহীন ছিলাম। আমি ৮ বছর বয়স থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন আইন মেনে চলা বাসিন্দা। আমি কলেজে পড়াশোনা করেছি। আমি এখানে একটি সফল বিবাহের ফটোগ্রাফার ব্যবসা পরিচালনা করি। সম্প্রতি আমি তাহিরকে বিয়ে করেছি। মার্কিন সরকার আমাকে বিশ্বের এমন একটি স্থানে নির্বাসন দিয়েছিল, যেখান থেকে আমার ফিরে আসা সম্ভব ছিল না। বাসে আমাকে ১৬ ঘন্টা ধরে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছিল, কোনও জল বা খাবার দেওয়া হয়নী। আমি গরুর মতো ঘুরে বেড়াচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে আরও বলে,’ গ্রেফতারের পরেই আমাকে ধূসর রঙের ট্র্যাকস্যুট এবং শিকল পরিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। আমাকে তিনটি আটক কেন্দ্রের মধ্যে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। প্রতিটি নির্বাসন কেন্দ্রে আমাকে কঠোর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। প্রথম স্থানান্তরের সময়, আমাকে রমজানের রোজা রাখার কারণে ১৬ ঘন্টা না খেয়ে বাসে কাটাতে হয়েছিল। আমাকে কোন জল বা খাবার দেওয়া হয়নি, কিন্তু আমরা ড্রাইভারের চিক-ফিল-এ খাওয়ার গন্ধ পেয়েছিলাল। আমরা জল চাইতাম, খাবারের জন্য দরজায় ধাক্কা দিতাম, আর সে কেবল রেডিও চালু রাখত এবং এমন ভাব করত যেন সে আমাদের কথা শুনতে পারছে না। ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে অবশেষে টয়লেটের কাছে একটি ইনটেক রুমে আমি অনশন ভাঙি। শৌচাগারগুলিও খুব অস্বাস্থ্যকর ছিল। বিছানাগুলিতে সর্বত্র মরিচা পড়েছিল। সেগুলি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। আর আরশোলা, ফড়িং, মাকড়সা হাঁটাচলা করত।’

প্রসঙ্গত, ওয়ার্ড সাকিক এবং তাঁর স্বামী, মার্কিন নাগরিক তাহির শেখ, তাঁর গ্রিন কার্ডের আবেদন বর্তমানে বিচারাধীন। তাই আন্তর্জাতিক ভ্রমণ জটিলতা এড়াতে তাঁরা হানিমুনের জন্য মার্কিন ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ বেছে নিয়েছিলেন। তবে, ফিরে আসার পর, অভিবাসন কর্তৃপক্ষ মহিলাকে আটক করে। তবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে যে, মার্কিন ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ এমন একটি মার্কিন অঞ্চল যেখানে ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ওই মহিলা বছরের পর বছর ধরে সেখানে অবস্থান করেছিলেন। তার উপর বহিষ্কারের আদেশ ছিল। সৌদি আরবে গাজার একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ওয়ার্ড সাকেক। বিদেশীদের সন্তানদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার সৌদি আরবের নীতির কারণে তিনি রাষ্ট্রহীন। ৮ বছর বয়সে, তাঁর পরিবার পর্যটন ভিসায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং পরে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করে, যা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এক দশকেরও বেশি সময় আগে তিনি একটি নির্বাসন আদেশ পেয়েছিলেন, তবুও সাকেককে “তত্ত্বাবধানের আদেশ” অনুসারে আমেরিকার থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে নিয়মিত ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হত।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

গুগলে ৫৪ লক্ষের বেতনে যোগ দিলেন জলপাইগুড়ির শ্রেয়া, গল্প শুনলে চোখে জল আসবে

‘অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য নয়’, কূটনীতিকদের কড়া নির্দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের

লুকানো হৃদরোগ শনাক্তে কার্ডিওলজিস্টদের চেয়েও নির্ভুল এই নতুন AI টুল

‘চাই নিরাপদে ফিরে আসুক’, ইয়েমেনে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত নিমিশা প্রিয়াকে নিয়ে শীর্ষ আদালতে জানাল কেন্দ্র

পহেলগাঁও হামলায় জড়িত পাক জঙ্গি সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসবাদী’র তকমা ট্রাম্প প্রশাসনের

জানেন কী, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে একমাত্র এই কৌরব যুদ্ধ করেছিলেন পাণ্ডবদের হয়ে?

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ