নিজস্ব প্রতিনিধি, ইসলামাবাদ: দীর্ঘ ৪ বছর পালিয়ে থাকার পরে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে ইসলামাবাদে পা রাখলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। শনিবার দুবাই থেকে ভাড়া করা বিমানে চেপে ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে পা রাখেন তিনি। সেনাপ্রধানের নির্দেশেই বিমানবন্দরে ছুটে যান আদালতের কর্মীরা। সেখানে দুর্নীতিবাজ নওয়াজকে জামিন সংক্রান্ত নথিপত্রে স্বাক্ষর করান তারা। সই সাবুদ শেষ করে ভাড়া করা বিমানেই লাহোরে পৌঁছন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, পরবর্তী ভোটে জিতে যাতে প্রধানমন্ত্রী পদে বসতে পারেন সেই অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই পাকিস্তানে ফিরেছেন দুর্নীতিবাজ নওয়াজ।
প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পাকিস্তানকে কার্যত লুঠেছিলেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফ। প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পরেই পিএমএল (এন) সুপ্রিমোকে বিচারের মুখোমুখি করান ইমরান খান। দুটি দুর্নীতি মামলায় নওয়াজকে ১৪ বছর জেলের সাজা শুনিয়েছিল আদালত। চিকিৎসার নাম করে লন্ডনে পালিয়ে যান তিনি। তার পরে বরিস জনসন আর ঋষি সুনকদের প্রশ্রয়ে লন্ডনেই বহাল তবিয়তে বসবাস করে রিমোট কন্ট্রোলে পাকিস্তানের রাজনীতিতে কলকাঠি নাড়তে থাকেন। ইমরান খান ক্ষমতায় থাকতে জীবদ্দশায় দেশে ফিরতে পারবেন না এমন আশঙ্কায় ব্রিটেন ও মার্কিন সরকারের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া গড়ে তোলেন। সেই ষড়যন্ত্রে সামিল হয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীও। শেষ পর্যন্ত ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সফল হন। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের একটি আদালত নওয়াজকে রক্ষাকবচ দিয়ে জানায়, আগামী ২৪ অক্টোবর অবধি গ্রেফতার করা যাবে না প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।
আগামী জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানে জাতীয় সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। ওই নির্বাচনে ফের যাতে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ ক্ষমতায় না ফিরতে পারে তার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ওই ষড়যন্ত্রে সামিল পাক সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, সেনাপ্রধান ও একাধিক সেনা আধিকারিকরা। ওই নির্বাচনে লড়ে ফের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে তার বিরুদ্ধে মামলা বন্ধ করাই নওয়াজের প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের (এন) এক শীর্ষ নেতা।