নিজস্ব প্রতিনিধি: একটা সময় হাওড়া স্টেশনই ছিল কলকাতার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের(South Eastern Railway) যাবতীয় লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ার একমাত্র স্টেশন। পরে রেলের নজরে পড়ে শানিলার(Shalimar Station) ও সাঁতরাগাছি স্টেশনের(Santragachi Station) দিকে। গত দুই দশকে আস্তে আস্তে এই দুই স্টেশনকেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের Base Station করার মতো করে রূপদান করা হয়েছে এবং এখনও সেটাই করা হচ্ছে। সেই সূত্রেই গতকাল দিল্লিতে সংসদ ভবনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের যে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করেছেন সেখানেই সাঁতরাগাছি-শালিমারকে সাজাতে বরাদ্দ করা হয়েছে মোট ১৩০০ কোটি টাকা। হিসাব বলছে গতবার বাজেটে এই দুই স্টেশনের উন্নয়নে যে বরাদ্দ করা হয়েছিল, এবারে তার থেকে বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। একইসঙ্গে এবার শালিমার স্টেশনেও বন্দে ভারতের(Vande Bharat Express) জন্য নিজস্ব পরিকাঠামো গড়তেও বরাদ্দ করা হয়েছে।
সাঁতরাগাছি স্টেশনকে আরও আধুনিক করে তুলতে বিপুল পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছিল আগে থেকেই। এবার প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাজানো হচ্ছে স্টেশন ও তৎসংলগ্ন পরিকাঠামো। হাওড়ার বিকল্প হিসেবে গড়ে তুলতে চাওয়া শালিমারের বরাদ্দ আরও বেশি, প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। তাই দিয়ে প্ল্যাটফর্ম, ইয়ার্ড, ট্র্যাক ও শালিমার রেল বিল্ডিং তৈরিই লক্ষ্য। এবার এই স্টেশনেই সম্পূর্ণ নিজস্ব বন্দে ভারত রক্ষণাবেক্ষণ পরিকাঠামো পেতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। দক্ষিণ-পূর্ব রেল তার জন্য আবেদনও করেছে রেল বোর্ডের সর্বোচ্চ স্তরে। অনুমোদন পেলে এখন থেকেই চলতে পারে এক বা একাধিক নতুন রুটের বন্দে ভারত। কারণ বর্তমানে পুরী এবং রাঁচি, দু’টি ট্রেনেরই ‘বেস’ এই রাজ্যে নয়। সেক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ বেস হিসেবে তৈরি হয়ে যাবে শালিমার। এছাড়াও লোকাল সহ এক্সপ্রেস চালানোর সংখ্যা বাড়বে। শালিমারে এখন মাত্র ৩টি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সেটাই এখন বাড়িয়ে ৫টি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এই স্টেশনের কাছেই নতুন একটি রোড ওভারব্রিজ এবং সাবওয়ে তৈরির কথাও জানিয়েছে রেল।
এবারের অন্তর্বর্তী বাজেটে দক্ষিণ –পূর্ব রে;এর খড়গপুর ডিভিশন ৫ হাজার ৫০৮ কোটি টাকার বরাদ্দ পেয়েছে। গতবার এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৮৬৭ কোটি। এই অর্থ বাংলা, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডে ছড়িয়ে থাকা জোনের মধ্যে বণ্টন করা হবে। দীর্ঘদিন ধরেই ব্যস্ত হাওড়ার বিকল্প হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে শালিমার ও সাঁতরাগাছিকে। কিন্তু এখনও সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। সাঁতরাগাছিতে যাও বা বাসের ভাল ব্যবস্থা আছে, শালিমারে সেটুকুও নেই। যাত্রীদের এই স্টেশনে আসতে যেমন রীতিমত নাস্তানাবুদ হতে হয় তেমনি মোট অঙ্কের টাকাও খরচ করতে হয়। একই সঙ্গে হাওড়া বা শিয়ালদার মতো মোটেও সুরক্ষিত স্টেশন নয় শালিমার ও সাঁতরাগাছি। দেখার বিষয় আগামী দিনে এই দুই স্টেশনের ছবি কতটা বদলাতে চলেছে।