নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁকে নানান সময়ে গেরুয়া শিবির থেকে শালীনতার গণ্ডি ডিঙিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আক্রমণের অভিমুখে আনা হয়েছে তাঁর পরিবার, স্ত্রী মায় ছেলেমেয়েকেও। কিন্তু সেই আক্রমণের বদলে তিনি কখনই শালীনতার গন্ডি অতিক্রম করে আক্রমণ শানেনই বিরোধী পক্ষকে। তবে শনিবার তিনি স্পষ্টই নাম করে করে আক্রমণ শানলেন অধিকারীদের। তিনি তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। শনিবার কাঁথির(Contai) প্রভাত কুমার কলেজের মাঠে ছিল তাঁর সভা। প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সেই সভা থেকেই তিনি নাম না করেই আক্রমণ শানিয়েছেন অধিকারীদের। হুঙ্কার দিয়েছেন, ‘এই কলেজ মাঠে আবার সভা হবে। তুমি তোমার খাতা নিয়ে আসবে। আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। আমাদের মধ্যে দুর্নীতি ইস্যুতে লড়াই হবে। আমি ওদের উলঙ্গ করে দেব।’
আরও পড়ুন ‘বিশ্বাসঘাতক বেইমান মুক্ত মেদিনীপুরের মাটি চাই’, ডাক অভিষেকের
কাঁথির মাটিউ কাদের গড়? অধিকারীদের নাকি আমজনতার? এই প্রশ্নের মীমাংসাও এদিন করে দিয়েছেন অভিষেক। নাম না করে অধিকারীদের আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আমাকে তোলাবাজ বলে। আমি ৫-৮ ডিসেম্বর দিল্লি যাব। সংসদ আছে। ১৫ দিন সময় দিলাম। এই কলেজ মাঠে আবার সভা হবে। তুমি তোমার খাতা নিয়ে আসবে। আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। আমাদের মধ্যে দুর্নীতি ইস্যুতে লড়াই হবে। আমি ওদের উলঙ্গ করে দেব। আপনার বাবাকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমি শিশির অধিকারীকে(Sishir Adhikari) কোনও দিন অসম্মান করিনি। বয়সের জন্য শ্রদ্ধা করি, কাজের জন্য নয়। এখানে সভা করতে এলেই প্রতিবার ধমকানো-চমকানো হয়। এর আগে আমার ওপর আক্রমণ চালানো হয়। জোকার চামচাকে দিয়ে আমাকে সমাজমাধ্যমে আক্রমণ করানো হয়েছিল। তাকে আমি বলেছি, তোর বাবাকে গিয়ে বল কাঁথি অধিকারীদের গড় নয়। এটা তৃণমূলের গড়। আমি কারও গড়ে আসিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের(Purba Midnapur) মানুষের গড়ে এসেছি। আমার কথা শুনবে বলে লেজ গুটিয়ে ডায়মন্ডহারবার পালিয়েছে। যত বার আমার নাম ব্যবহার করবে তত বার অক্সিজেন পাবে।’
আরও পড়ুন ‘আপনার মতো কেউ এসে আমাদের কথা শোনেনি’, শুনলেন অভিষেক
এর পাশাপাশি এদিন অভিষেক পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়েও সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন দলের কর্মী থেকে নেতাদের। এক্ষেত্রেও তিনি নাম না করে বার্তা দিয়েছেন অধিকাড়ীদের। বলেছেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবাধ ভোট হবে। যারা ভোটে লড়তে চায় না তারা নানা টালবাহানা করছে। ২০১১ সালে যা আসন পেয়েছিল তার থেকে ২০১৬ এবং ২০২১ সালে বেশি আসন পেয়েছে তৃণমূল। অধিকারী পরিবার ছিল না বলে আমরা বেশি আসন পেয়েছি। কোন রাস্তায় কবে কত টাকা চুরি হয়েছে সব ওঁর মুখস্থ। কারণ উনি এই সবের মাথা। আমি পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে গোটা রাজ্যের মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী এঁদের বিশ্বাস করার জন্য। আমাদের দোষ রয়েছে ওদের ১০ বছর ক্ষমতা দিয়ে রাখার জন্য। আমাদের নেতাদেরও একটা পরিবারের ওপর ভরসা না করে গ্রামে গ্রামে যাওয়া উচিত ছিল। যারা আদর্শ, মূল্যবোধের কথা বলে, তাদের বাড়িতে দুটো তৃণমূলের প্রতীকে জেতা সাংসদ বিজেপির সঙ্গে কানামাছি বৌ বৌ খেলছে। বিবেক, মূল্যবোধ, মর্যাদা, সম্মান থাকলে বিজেপির মঞ্চে যাওয়ার আগে ইস্তফা দিয়ে যেতেন। হোক না নির্বাচন। আমিও চাই। মানুষ প্রমাণ করে দেবেন তাঁরা কাদের সঙ্গে আছেন। আমরা এই বিশ্বাসঘাতকদের পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়া করে ছাড়ব, রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া করে দেব। আমি নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়ে যাচ্ছি। কত ক্ষমতা দেখব। যতদিন না বেইমান মুক্ত করতে পারি তত দিন এই লড়াই চলবে।’