নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর(Paresh Chandra Adhikari) মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর(Ankita Adhikari) স্কুলে চাকরি করার জন্য নিয়োগ বিতর্কে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court) রায় দিয়ে দিয়েছে। আদালতের নির্দেশে অঙ্কিতার শুধু যে চাকরি গিয়েছে তাই নয়, চাকরিরত অবস্থায় পাওয়া সমস্ত বেতন ও ভাতা ২ কিস্তিতে ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। আর সেটাও চলতি বছরের জুন ও জুলাই মাসের মধ্যে। সেই বিতর্কের মধ্যেই কলেজ সার্ভিস(College Service Commission) কমিশনের ইন্টারভিউয়ের(Interview) তালিকায় নাম উঠল অঙ্কিতার। আর তা নিয়েই ছড়িয়েছে বিতর্ক। আদালতের নির্দেশে যার চাকরি গিয়েছে এবং যার চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতির ঘটনা কার্যত প্রমাণ হয়ে গিয়েছে সেই প্রভাবশালী মন্ত্রীকন্যার নাম কীভাবে ইন্টারভিউ তালিকায় এল তা নিয়েই মূলত প্রশ্ন উঠেছে।
কলেজ সার্ভিস কমিশনের ইন্টারভিউর ডাক পাওয়া প্রার্থীদের যে তালিকা প্রকাশ্যে রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপকের শূন্যপদের জন্য ইন্টারভিউর তালিকায় দেখা গিয়েছে তাঁর নাম। গত ২৬ এপ্রিল ইন্টারভিউও দিয়েছেন অঙ্কিতা। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতে কলেজ সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি আদালতের নির্দেশ জারি হওয়ার আগের। তাছাড়া অঙ্কিতা অধিকারীকে অন্য কোনও চাকরির ইন্টারভিউতে ডাকা যাবে না এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। যোগ্য প্রার্থী হিসাবে পদ্ধতি মেনেই অঙ্কিতাকে ডাকা হয়েছে। এই বিতর্ক অনর্থক। কিন্তু এই দাবি মানতে নারাজ অভিযোগকারীরা। তাঁদের দাবি, যে সময়ে ইন্টারভিউ হয়েছে সেই সময়ে অঙ্কিতাকে নিয়ে বিতর্ক সামনে আসেনি। তাই সেই সময়ে হওয়া ইন্টারভিউ কতখানি নিরপেক্ষ ও সঠিক হয়েছে তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। এবারেও যে ঘুরপথে যোগ্যদের টপকে অঙ্কিতাকে যে চাকরি দিয়ে দেওয়া হবে না তার গ্যারেন্টি কোথায়!
উল্লেখ্য, গত ২০ মে শুক্রবার শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে শিক্ষিকার চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়ম ভেঙে তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়ে এই নির্দেশ দেন বিচারপতি। অভিযোগ, ইন্টারভিউ না দিয়েই চাকরি পেয়েছেন তিনি। সঙ্গে আদালত জানায়, চাকরিরত অবস্থায় পাওয়া সমস্ত বেতন ও ভাতা ২ কিস্তিতে ফেরত দিতে হবে অঙ্কিতাকে। সোমবার মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছয় অঙ্কিতার বেতন বন্ধের নোটিশ। এর পর শুরু হয়েছে তাঁকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া। তার মাঝেই চলে এল অঙ্কিতাকে ঘিরে নয়া বিতর্ক।