নিজস্ব প্রতিনিধি: স্ত্রীকে মারধর ও সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে শহরের অভিজাত এলাকার এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ব্যবসায়ীর নাম সুমিত আগরওয়াল। বৃহস্পতিবার রাতে শেক্সপিয়র সরণি থেকে সুমিত আগরওয়ালকে গ্রেফতার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। শ্বশুরবাড়ির এক সদস্য মহিলাকে শ্লীলতাহানি করে বলেও অভিযোগ।
মহিলার অভিযোগ, তাঁর শ্বশুরবাড়ির এক সদস্য তাঁকে শ্লীলতাহানি করে। এ কথা স্বামীকে জানালে স্বামী অস্বীকার করে। স্ত্রীর পাশে দাঁড়ানোর বদলে রীতিমতো তাঁকে ধমকাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। স্ত্রী মিথ্যা কথা বলছেন, এই অভিযোগ তুলে স্ত্রীর উপর শুরু করেন শারীরীক নিগ্রহ। ওই গৃহবধূর আরও অভিযোগ, বিভিন্ন সময় স্বামীর অত্যাচারের প্রতিবাদ করেন তিনি। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘা হয়ে যায়। ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসাও করান। সহ্যের সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় এরপর তিনি গত বছর শেক্সপিয়র সরণি থানায় স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে এই ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। লালবাজারের মহিলাদের অভিযোগ শাখার গোয়েন্দা আধিকারিকরা অভিযোগকারিণীর মুখ থেকে পুরো অভিযোগ শোনার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণী মহিলার সঙ্গে ২০০০ সালে বিয়ে হয় ব্যবসায়ী সুমিতের। বিয়ের পর থেকে মহিলার ওপর পণের জন্য অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ। তবু অশান্তি এড়াতে অত্যাচার হওয়া সত্ত্বেও তা মুখ বুজে সহ্য করেন তিনি। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচার দিন দিন বাড়তেই থাকে। এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানান, আইনিভাবে নিজেদের বাঁচাতে অভিযুক্ত শ্বশুর ও স্বামী আদালতের দ্বারস্থ হন। মহিলার শ্বশুর বয়সজনিত কারণে আদালত থেকে আগাম জামিন পান। কিন্তু নিম্ন আদালত মহিলার স্বামীর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর হাই কোর্টেও আবেদন জানান ব্যবসায়ী সুমিত আগরওয়াল। কিন্তু হাই কোর্টও ওই অভিযুক্তকে রক্ষাকবচ দেয়নি। তারপরই বৃহস্পতিবার রাতে সুমিতকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাঁকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।