নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার পাড়ায় পাড়ায় রক্তদান শিবিরের(Blood Donations Camps) উদ্যোক্তাদের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘ব্লাড মোবাইল’ বাস(Blood Mobile Bus)। ঝাঁ চকচকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, পুশ ব্যাক সিটের এই বাসগুলি কার্যত কলকাতা(Kolkata) ও শহরতলি এলাকায় রক্তদানের ক্ষেত্রে কার্যত ছোটখাট বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে। শুধু এই বাসের ভেতরে আধশোয়া হয়ে চোখ বুজে এসির হাওয়া খেতে খেতে রক্ত দেওয়ার জন্য রীতিমত পাড়ায় পাড়ায় ১৮ থেকে ৫৮দের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। আগে যেখানে পাহাড় গাদা গাদা মাইক বেঁধে হাজারবার চিল চিৎকার জুড়লেও রক্তদাতা(Blood Donors) মিলতো না, এখন সেখানে এই ‘ব্লাড মোবাইল’ বাসের দৌলতে রক্তদাতাদের সন্ধান আর করতে হয় না। পাড়ায় একটু প্রচার করে দিলেই রক্তদাতারা যথাসময়ে এসে হাজির হয়ে যান। আর তাই এই সরকারি ব্লাড ডোনেশন বাসের চাহিদা ক্রমশ বেড়েই চলেছে বাংলার বুকে। এই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এবার রাজ্য সরকার আরও নতুন ১২টি ‘ব্লাড মোবাইল’ বাস কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা গিয়েছে, কোভিডের সময়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন না করায় রক্তের আকাল দেখা দিয়েছিল। সেই সময় কোভিডবিধি মেনে যাতে ভ্রাম্যমান রক্তদান শিবিরের আয়োজন করানো যায় তার জন্যই রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে এক এক করে মোট ১০টি ‘ব্লাড মোবাইল’ বাস কিনেছিল। তারপরেই দেখা যায় সেই ভ্রাম্যমান ‘ব্লাড মোবাইল’ বাসে গিয়ে রক্তদান দান করতে অনেকেই বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এমনকি তথাকথিত ভাবে যারা এতদিন রক্তদান করতে চাইতেন না তাঁরাও এগিয়ে আসছেন রক্তদান করতে। অচিরেই এই ‘ব্লাড মোবাইল’ বাস বুকিং করে তার মাধ্যমে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার আগ্রহ চোখে পড়ে কলকাতা ও শহরতলি এলাকায়। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে বাসের বুকিংয়ের জন্য কেউ ৬ মাস আগে থেকে তো কেউ ৮ মাস আগে থেকে স্বাস্থ্য ভবন এসে হত্যে দিচ্ছেন। এখন কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় এই ধরনের ৪টি বাস পরিষেবা দিচ্ছে। বাকি ৬টি বাস পরিষেবা দিচ্ছে রাজ্যের ৬টি জেলায়। এগুলি হল – কোচবিহার, দার্জিলিং, মালদহ, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং বাঁকুড়া।
এখন রাজ্যের আরও ১২টি জেলাতেও যাতে এই পরিষেবা চালু করা যায় সেই লক্ষ্যেই রাজ্য সরকার আরও নতুন ১২টি ‘ব্লাড মোবাইল’ বাস কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য স্বাস্থ্য দফতর(Health Department) সাড়ে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে। কেননা এক একটি বাসের দাম প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। এই সব বাসের ভিতরে শুধু যে রক্তদাতাদের রক্ত দেওয়ার মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে তাই নয়, এতে থাকছে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বসার বন্দোবস্ত। দেখা যাচ্ছে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছেন যারা তাঁরা এই বাসগুলি ঘন্টা ৬য়ের জন্য বুকিং করছেন। আর ওই সময়ের মধ্যে ১৮ থেকে ৩০জন সদস্য রক্তদান করে যাচ্ছেন এই ‘ব্লাড মোবাইল’ বাসে।