নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘মোদের গরব মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা।’ গর্বিত বাংলা, গর্বিত বাঙালিরা। রাষ্ট্রসঙ্ঘে(UNO) বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে এবার থেকে ব্যবহৃত হবে বাংলা(Bengla) ভাষা। শুধু তাই নয়, হিন্দি(Hindi) এবং উর্দু(Urdu)ও থাকছে সেই তালিকায়। গত শুক্রবার নিউইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে(General Assembly) বহুভাষাবাদ নিয়ে ভারত সমর্থিত একটি প্রস্তাবনা গৃহীত হয়েছে। সেই প্রস্তাবে বেসরকারি ভাষা হিসেবে এই প্রথম জায়গা পেয়েছে বাংলা, হিন্দি এবং উর্দু। টুইটারে একথা জানিয়েছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি। এবারে মোট ছ’টি ভাষাকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। সেগুলি হল, আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ ও স্প্যানিশ। তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সচিবালয়ে কাজকর্ম হয়ে থাকে মূলত ইংরেজি ও ফরাসিতে।
বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়া রাষ্ট্রসঙ্ঘের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সেই লক্ষ্যেই সাধারণ অধিবেশনে বহুভাষাবাদের পক্ষে প্রস্তাবনা আনে দু’টি দেশ, অ্যান্ডোরা এবং কলম্বিয়া। তাতে সমর্থন জানায় ভারত সহ ৮০টি দেশ। প্রস্তাবনায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের ডিপার্টমেন্ট অব গ্লোবাল কমিউনিকেশনসের প্রশংসা করে বলা হয়, মহাসচিবের বার্তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের জন্য পর্তুগিজ, হিন্দি, কিসওয়াহিলি, ফারসি, বাংলা এবং উর্দুর মতো বেসরকারি ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। এরপর সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিরুমূর্তি বলেন, ‘এই বছর প্রথমবারের জন্য প্রস্তাবনায় হিন্দি ভাষার উল্লেখ রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলা ও উর্দুরও উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রথম। এই সংযুক্তিকরণকে স্বাগত জানাই।’ রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবকে ধন্যবাদও জানান তিনি। এখন থেকে সরকারি ছ’টি ভাষার পাশাপাশি বেসরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা, হিন্দি, উর্দু ভাষাতেও রাষ্ট্রসঙ্ঘের বার্তা পাওয়া যাবে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘে বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি আগেই তুলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই মতো সেদেশের জাতীয় সংসদে প্রস্তাবনাও নেওয়া হয়। কিন্তু আর্থিক কারণে সেদিকে অগ্রসর হতে পারেনি ভারতের এই প্রতিবেশী দেশ। তবে সেই উদ্যোগ এবার আংশিক সফল হয়েছে। অন্যদিকে, হিন্দিকে রাষ্ট্রসঙ্ঘে তুলে ধরার উদ্যোগ আগেই নিয়েছে মোদি সরকার। ২০১৮ সালে নেওয়া হয়েছে ‘হিন্দি@ইউএন’ প্রকল্প। রাষ্ট্রসঙ্ঘে হিন্দির প্রসারের লক্ষ্যে গত মাসে ৮ লক্ষ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে ভারত। তারই সুফল মিলতে শুরু করেছে বলেই মত নয়াদিল্লির। তবে বাংলা যে এবার রাষ্ট্রপুঞ্জের হাত ধরে বিশ্বভাষা হয়ে উঠল তা নিয়ে বাঙালিদের গর্বিত হতেই হবে।