নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বুকে বিজেপির(BJP) পরাজয়ের ধারা অব্যাহত থাকল রাজ্যের ৬টি পুরসভার ৬টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে(Bye Election)। গত রবিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ৪টি পুরসভার ১টি করে ওয়ার্ডে উপনির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ করা হয়। একই দিনে ভোট হয়েছিল হুগলি ও পুরুলিয়া জেলার ২টি পুরসভার ১টি করে ওয়ার্ডে। মোট ৬টি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হয়। বুধবার সকাল থেকে সেই উপনির্বাচনের ভোটগনার পালা শুরু হয়। খুব দ্রুত উঠে আসে ফলাফল। দেখা যায় ৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪টি ওয়ার্ডের জয়ী হয়েছে তৃণমূল(TMC)। ১টি করে ওয়ার্ডে জিতেছে বাম(Left) ও কংগ্রেস(INC)। বিজেপি শুধু শূন্য পেয়েছে তাই নয়, এই ৬টি ওয়ার্ডেই তাঁরা দ্বিতীয় স্থানেও উঠে আসতে পারেনি। বাম ও কংগ্রেসের কাছে বিজেপি কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার যে ৪টি পুরসভার ১টি করে ওয়ার্ডে ভোট হয়েছিল সেগুলি হল পানিহাটি(Panihati) পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড, দমদম পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড, দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং ভাটপাড়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ৪টি ওয়ার্ডের এদিন ভোটগণনার কাজ চলে ব্যারাকপুরের মহকুমা প্রশাসনিক ভবনে। বেশ কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে সেই ভোটগণনার কাজ শুরু হয়। প্রথমেই উঠে আসে পানিহাটির ফলাফল। সেখানে ২২৭৪ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মীনাক্ষী দত্ত। কয়েক মাস আগে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মীনাক্ষী দেবীর স্বামী অনুপম দত্ত দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন। তার জেরেই এই উপনির্বাচন হয়। এরপরেই জানা যায় অর্জুন সিংয়ে গড় হিসাবে পরিচিত ভাটপাড়া পুরসভার ফলাফল। সেখানে প্রায় ৪০০ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী কনক লতা দাস। দমদম পুরসভায় জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী তাপ্স রায়। তিনিও প্রায় ৪০০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। দক্ষিণ দমদম পুরসভায় জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী বনশ্রী চট্ট্যোপাধ্যায় আর সেটাও কয়েক হাজার ভোতের ব্যবধানে। এই ৪টি ওয়ার্ডেই দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছন বাম প্রার্থীরা। বিজেপি এই ৪টি ওয়ার্ডের কোথাও পেয়েছে ৬৭ ভোট কোথাও বা ৩৭ ভোট।
পুরুলিয়া জেলার ঝালদা(Jhalda) পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের চারবারের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুন হওয়ায় ওই আসনেও ভোটগ্রহণ করা হয় গত রবিবার। সেখানে জয়ী হয়েছেন তপনবাবুর ভাইপো তথা কংগ্রেস প্রার্থী মিঠুন কান্দু। তিনি পেয়েছেন প্রায় ৯৩০টি ভোট। তাঁর নিকটতম প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের জগন্নাথ রজক পেয়েছেন ১৫২টি ভোট। আর সেই ফলাফল সামনে আসতেই তৃণমূল প্রার্থী অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছেন দলেরই নেতা আশিষ রায়ের বিরুদ্ধে। আবার চন্দননগর পুরনিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ১৩০ ভোটে জয়ী হয়েছেন। বিজেপি সেখানে তৃতীয় স্থানে। তবে এই দুই ওয়ার্ডে তৃণমূল হারলেও দুই পুরসভাতেই তৃণমূল ক্ষমতায় থেকে যাচ্ছে। তবে সব থেকে বড় ঘটনা এটাই বাংলার রাজনীতিতে আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বামেরা। তাঁরা এবার ৫টি ওয়ার্ডে বিজেপিকে পিছনে ফেলে শুধু যে উঠে এসেছে তাই নয়, ১টিতে তাঁরা জয়ীও হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে হারিয়ে। বিজেপির মুখ কার্যত আরও পুড়ল এই উপনির্বাচনের ফলাফলে।