নিজস্ব প্রতিনিধি: কড়া ধাক্কার মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর সেটাও আদালতে। নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI’র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC’র নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহা(Shanti Prasad Sinha)। সোমবার তাঁকেই তোলা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে(Court)। সেখানে CBI’র তরফ থেকে আরও একবার হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানালেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিচারক। তারপরেই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন শহরে পা রাষ্ট্রপতির, ২ দিনের কড়া যান শাসনে হাওড়া-কলকাতা
নিয়োগ মামলা অভিযুক্তরা এর আগে যত বারই আদালতে জামিনের আবেদন করেছেন, সিবিআই তার বিরোধিতা করেছে। প্রত্যেক শুনানিতেই নতুন করে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। সোমবার সত্তরোর্ধ্ব শান্তিপ্রসাদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। শান্তিপ্রসাদকে নতুন করে হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আদালতে শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী এদিন জানান, ইতিমধ্যেই হেফাজতে ২৫৯ দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে কাটিয়ে ফেলেছেন শান্তিপ্রসাদ। যদি নতুন করে তাঁকে হেফাজতেই নেওয়ার প্রয়োজন থেকে থাকে, তবে সে কথা গত ২৫৯ দিনে কেন মনে পড়েনি সিবিআইয়ের। এই প্রশ্ন করার পরে বিচারকও CBI-কে নির্দেশ দেন প্রশ্নটির জবাব দিতে। কিন্তু CBI-য়ের তদন্তকারী অফিসার বা আইনজীবী এর স্পষ্ট কোনও জবাব দিতে পারেননি। কিছুটা ঘুরপথে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী আদালতকে জানান, ‘ওঁদের জামিন দিলে সমাজ তা মেনে নেবে না। সমাজের মানুষকে নৈতিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করতেই ওঁদের হেফাজতে নেওয়া দরকার।’ তার পরেই বিচারক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘CBI কেন একই কথা টেপ রেকর্ডারের মতো বার বার বলে চলেছে? অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হলে কী হতে পারে বলে আশঙ্কা CBI-য়ের? তারা কী নাচবেন? সেই একই টেপ রেকর্ডার বাজাচ্ছেন! আপনারা কী জ্যোতিষী হয়ে গিয়েছেন? আপনারা বলছেন এরা মুক্তি পেলে সাক্ষীদের হুমকি দেবেন। আপনারা কী তার FIR করেছেন। আমি কিন্তু বলছি এভাবে চললে আপনারা কিন্তু ফেঁসে যাবেন।’
আরও পড়ুন পঞ্চায়েত ভোটের আগে নয়া দায়িত্ব বাংলার BDO-দের
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, কোটি কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতির রাশ অনেকটাই শান্তিপ্রসাদের হাতে ছিল। কলকাতার যোগমায়া দেবী কলেজের শিক্ষক শান্তিপ্রসাদ ২০১২ সালে অবসর নেওয়ার পর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আনুকূল্যেই SSC’র বোর্ডে নিযুক্ত হয়েছিলেন বলে চার্জশিটে জানিয়েছিল CBI। শুধু তা-ই নয়, ৬৮ বছরের শান্তিপ্রসাদকে SSC-তে নিয়ে আসার জন্য School Service Commission’র আইনেও বদল আনা হয়েছিল। পরে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত স্কুলের চাকরি ‘বিক্রি’র দুই দালাল প্রসন্ন রায় এবং প্রদীপ কুমার সিংহের সঙ্গে শান্তিপ্রসাদের নিয়মিত যোগাযোগেরও ‘প্রমাণ’ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছিল CBI। সেই অভিযোগের জেরেই গত অগস্টে গ্রেফতার করা হয় শান্তিপ্রসাদকে। তারপর থেকেই তিনি বন্দি অবস্থাতেই রয়েছেন। এদিন মামলার শুনানি হলেও তাঁর রায় দান স্থগিত রাখা হয়েছে।