নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার(Kolkata) প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের(Esplanade Bus Stand) কারণে ওই এলাকায় যানজট ও ধোঁয়া-দূষণ কমাতে পার্কিংয়ের বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) আবেদন করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। বর্তমানে মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে বিচারাধীন। যেহেতু ময়দান এলাকা সেনাবাহিনীর অধীনে তাই সেই মামলায় সেনাবাহিনীর(Army) তরফে হলফনামা দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, মানুষের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে, ময়দানের পরিবেশের কথা ভেবে এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কথা ভেবে ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নিক রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই রায়ে আদালত কোনও সময়সীমা বেঁধে দেয়নি। কিন্তু এবার আদালত একটু চাপ দিল রাজ্য সহ সব পক্ষকেই। আগামিকাল অর্থাৎ সোমবার ১৭ জুলাই ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ড সরানো নিয়ে বৈঠক ডেকেছে রাজ্য। সেই বৈঠকে সেনাবাহিনী সহ রাজ্য পরিবহণ দফতর, রাজ্য পরিবহণ নিগম, রাজ্য পূর্ত দফতর, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড ও রাইটস(RITES)-এর কর্তারা যাতে হাজির থাকেন তা নির্দেশ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন কেন্দ্র রাজ্য নয়া সংঘাত, নেপথ্যে গ্রাম সড়ক যোজনা
ময়দানে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সেই দূষণের দরুণ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এই দূষণের উৎস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ড এবং ময়দান এলাকার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। সেই মর্মেই সুভাষবাবু নতুন করে মামলা দায়ের করেন যেখানে আদালত এবার রাজ্যকে একটু চাপ দিল ধর্মতলা থেকে বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়ার জন্য। আবার ময়দান এলাকা যেহেতু সেনাবাহিনীর অধীনে তাই এই মামলায় শরিক হয়েছে তাঁরাও। তার জেরেই তাঁরা আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, ময়দান বা সংলগ্ন এলাকায় পার্কিংয়ের স্থায়ী বন্দোবস্ত হলে তা শহরের সবুজে ভাগ বসাবে। রাজনৈতিক, ধর্মীয়-সহ নানা জমায়েতে ময়দানে নির্বিচারে গাড়ি রাখা হয়। সেই সব যান থেকে বেরোনো ধোঁয়াও অনেকটাই বেশি। প্রতিদিন ময়দানে জড়ো হওয়া মানুষের স্বাস্থ্যে সেই ধোঁয়া-দূষণের প্রভাব নিয়ে সমীক্ষা হওয়া দরকার, ঠিক যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল, গাড়ির ধোঁয়া ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কাঠামোর কতটা ক্ষতি করছে। তাছাড়া ময়দানে পার্কিংয়ের আবেদন প্রতিনিয়ত যেভাবে বাড়ছে তাও বেশ উদ্বেগজনক। এই অবস্থায় বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়াই ভাল। সেই সঙ্গে পার্কিংও নিয়ন্ত্রিত হওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন বানভাসি উত্তরবঙ্গে বিশেষ টিম পাঠাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, জানালেন ট্যুইটে
সেনার এই হলফনামা খতিয়ে দেখেই আদালত রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ড সরানো নিয়ে তাঁরা পদক্ষেপ করুক। ডাকুক বৈঠক। সেই বৈঠকে যাতে সেনাবাহিনী ছাড়াও রাজ্য পরিবহণ দফতর, রাজ্য পরিবহণ নিগম, রাজ্য পূর্ত দফতর, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড ও রাইটস-এর কর্তারা থাকেন তার জন্য নির্দেশ জারিও করে দিয়েছে আদালত। আগামিকালই সেই বৈঠক হতে চলেছে। যদিও সেই বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে কোথায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। মাঝে রাজ্য সরকার ঠিক করেছিল এই বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে নিয়ে চলে যাওয়া হবে। কিন্তু কোনও বেসরকারি বাস মালিকই তাতে সায় দেয়নি। তাই রাজ্যের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িতও হয়নি। যদিও আদালত রাইটসকে দায়িত্ব দিয়েছে এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়ে নতুন বাসস্ট্যান্ডের জায়গা চিহ্নিত করতে যাতে আমজনতার সেখানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা না হয়।