নিজস্ব প্রতিনিধি: শীতলকুচির গুলিচালনার ঘটনা এখনও বঙ্গ জীবনে ক্ষত হয়ে রয়েছে। সেই ক্ষত শুকানোর আগেই বিজেপির নেতারা ফের গুলি করে মারার হুমকি দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার সম্প্রতি একটি সভা থেকেই এই হুমকি দিয়েছেন। তার জেরে তৃণমূলের তরফে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আগেই যা সমালোচনা করার তা করেছেন। এবার আরও এক কদম এগিয়ে স্বপনকে কার্যত কড়া সতর্কবার্তা দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বিধায়ক হয়েও যদি স্বপন এই ধরনের বেলাগাম মন্তব্য করে যান তাহলে তার পরিণতি হিসাবে তাঁকে যে জেলে যেতে হতে পারে সেটাই জানিয়ে দিলেন ফিরহাদ।
বঙ্গ বিজেপিতে যখন বিক্ষুব্ধদের বিদ্রোহের জেরে গোটা দলটাই আড়াআড়ি ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে ঠিক তখনই বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারকে ঘিরে সংবাদমাধ্যমের নজর আটকে গিয়েছে। কেননা মতুয়া অধ্যুষিত এলাকা থেকে জয়ী হলেও স্বপন মতুয়া সঙ্ঘের মাথা তথা দলের সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্ব মেনে নেননি। বরঞ্চ তাঁর বিপক্ষেই স্বপনকে অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিককালে শান্তনু বঙ্গ বিজেপির যে বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বৈঠক করেছেন সেখানে স্বপনের দেখা মেলেনি। বরঞ্চ স্বপন জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি এই বৈঠকের তীব্র বিরোধী। সাম্প্রতিক কালে এটাও সামনে এসেছে যে বঙ্গ বিজেপির প্রধান সংগঠক অমিতাভ চক্রবর্তী দলকে বাংলায় কড়া হিন্দুত্বের পথে হাঁটাতে চান। যদি ধরেই নেওয়া যায় অমিতাভের নির্দেশে বা তাঁর দেখানো পথে হেঁটেই স্বপন এনকাউন্টারের হুমকি দিচ্ছেন তাহলে বাংলার সামনে কিন্তু বড় বিপদই লুকিয়ে যাছে।
তবে ফিরহাদ হাকিম, স্বপনকে সাফ কড়া বার্তা দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গকে কোনওদিন উত্তরপ্রদেশ বা গুজরাত হতে দেব না। এখানে দাঙ্গার রাজনীতি বা এনকাউন্টার করা যাবে না। কারণ এখানকার মুখ্যমন্ত্রী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে গণতান্ত্রিক ও সংবিধানিক উপায়ে সরকার ও প্রশাসনের কাজ হয়। তৃণমূলকে এনকাউন্টার করে মেরে দিতে পারবে না। বিজেপি এখানে কোনওদিন ক্ষমতায় আসবে না। বিজেপি দলটাই ভারতবর্ষ থেকে বেরিয়ে যাবে। যদি এনকাউন্টারের মানসিকতা থাকে তাহলে জেলে জায়গা হবে। উনি নিজে পাল্টি খেতে পারেন আশ্রয় পাওয়ার জন্য।’