-273ºc,
Friday, 9th June, 2023 3:17 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: মা-ঠাকুমাদের গয়নার বাক্স খুললে মানতাসা, সাতনরি হার, পাতি হার, রতনচূড় বা মিনাকারির হাঙরমুখ বালা ঝিলিক তোলে এখনও। যুগ যুগ ধরে বাঙালি কারিগরদের মেধা, দক্ষতা, শিল্পীসত্তা ও পরিশ্রমের ফসল সেগুলি। এই কাজে তাঁদের মুন্সিয়ানা প্রশ্নাতীত। ফলে এই কারিগরদের নামডাকও যথেষ্ট। বাংলার বাইরেও তাই তাঁরা ডাক পান কাজের জন্য। কেউ যান দিল্লি, তো কেউ মুম্বই, তো কেউ সুরাট। বাংলার বুকেও আছে হাজার হাজার সোনার গয়নার দোকান। বাদ নেই কলকাতাও। শহরের বুকে বউবাজার, বড়বাজার, গড়িয়াহাট, হাতিবাগান এলাকায় অলিগলিতে অজস্র ছোট ছোট কারখানা আছে। কুঠুরির মতো সেই কারখানাগুলিতে বংশ পরম্পরায় গয়না তৈরি করেন কারিগররা। সেই কারুশিল্পের(Jewellery of Kolkata) স্বত্ত্ব নিজেদের হাতে নিতে এবং কলকাতার গয়নায় Geographical Indication বা GI তকমা পাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে এবার শুরু হয়ে গেল গবেষণার কাজ।
আরও পড়ুন অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে CBI, সুপ্রিম রায়
কলকাতার গয়না যাতে GI তকমা পায় তার জন্য আবেদন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগেই। এবার তার জন্য গবেষণার কাজ শুরু করেছে West Bengal National University of Juridical Science বা NUJS। যেহেতু কলকাতার গয়নাকে GI তকমা পেতে হলে যথাযথ যুক্তি ও প্রমাণ দাখিল করতে হবে তাই NUJS এই গবেষণার কাজ শুরু করেছে। এটি হলে বাঙালি কারিগরদের হাতের কাজ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে। Gem and Jewellery Export Promotion Council এক অনুষ্ঠানে এমনই দাবি করেছেন সংস্থার পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখ। এই অনুষ্ঠানে কাস্টমস কর্তাদের সামনে এখানকার গয়নার রফতানি সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন পঙ্কজবাবু। তিনি জানান, কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে যে সোনার গয়না বিদেশে যায় তার বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের তিনটি ধাপ রয়েছে। প্রথম ধাপে রফতানিকারক সংস্থার নিজস্ব শংসাপত্র থাকা চাই, দ্বিতীয় ধাপে, থার্ড পার্টির তরফে সোনা যাচাই সংক্রান্ত শংসাপত্র চাই এবং তৃতীয় তথা চূড়ান্ত ধাপে বিমানবন্দরের নিজস্ব মেশিন দ্বারা গয়নার পরীক্ষা হওয়া চাই। যদি বিমানবন্দরের যন্ত্রটি খারাপ থাকে তাহলে বাকি দু’টি শংসাপত্র গৃহীত হয় না। অথচ আগে তা গ্রহণ করা হতো।
আরও পড়ুন নজরে Civil Service, আগ্রহী পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণের Team গড়ল রাজ্য
পঙ্কজবাবুর বক্তব্য, রফতানিকারক সংস্থা থেকে গয়না বাজারে আসা থেকে শুরু করে বিদেশে ক্রেতার হাতে তা পৌঁছনো পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে গয়নার বিমা করা থাকে। কিন্তু খারাপ মেশিনের কারণে যদি বিমানবন্দর থেকে গয়না ফেরত চলে আসে, তার জন্য কোনও বিমা নেই। এক্ষেত্রে কোনও অঘটন ঘটলে তার দায় কে নেবে? পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, রপ্তানিকারক সংস্থাগুলির থেকে One Time Certificate বা KYC নেয় কাস্টমস, যার কোনও যুক্তি নেই। সেই KYC অনুমোদিত হতে দেরি হলে অনেক ক্ষেত্রেই গয়নার রফতানির চুক্তি বাতিল হয়ে যায় বা ডেলিভারি করতে দেরি হয়। এই নিয়ম তুলে দিলে বা সময়ে KYC অনুমোদন করলে বাংলা থেকে অনেক বেশি গয়না রফতানি সম্ভব।