নিজস্ব প্রতিনিধি: লাগামে রাশ টানলেন নাড্ডা। নেপথ্যে আরএসএস(RSS) বা সঙ্ঘের রিপোর্ট। ৩দিনের সফরে বাংলায় এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা(J P Nadda)। বৃহস্পতিবার তিনিই কিন্তু বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) নেতা থেকে কর্মী সকলের যখন খুশি যা খুশি বলার ক্ষেত্রে কার্যত রাশ টেনে দিলেন। বিশেষ করে বাংলা ভাগের বিষয় নিয়ে দলের কোন নেতা, কর্মী, বিধায়ক, সাংসদ বা কোনও প্রকারের দলীয় জনপ্রতিনিধি যাতে মুখ না খোলেন এদিন সেই নির্দেশ দিয়ে দিলেন নাড্ডা। রাজারহাট নিউটাউনের(Newtown) হোটেলে বঙ্গ বিজেপির রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এমন নির্দেশই দিয়েছেন নাড্ডা, অন্তত বঙ্গ বিজেপি সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। আর সেই নির্দেশের পিছনে যে সঙ্ঘের রিপোর্ট কাজ করছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
গতকালই নাড্ডার হাতে আরএসএসের তরফে এ রাজ্যের দায়িত্বে থাকা এক সদস্য নাড্ডাকে এই রিপোর্ট তুলে দেন বলে বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই রিপোর্টেই সাফ জানানো হয়েছে বিজেপির সাংসদ থেকে বিধায়করা বাংলা ভাগ নিয়ে যে ধারাবাহিক দাদি জানিয়ে চলেছেন তা আদতে বাংলা জুড়ে বিজেপির ভাবমূর্তি খারাপ করছে। দলের গ্রহণযোগ্যতা চূড়ান্ত ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৪ এর নির্বাচনে বাংলা থেকে বিজেপিকে খালি হাতেই ফিরতে হবে। ওই রিপোর্টে এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলায় ২০১৯ সালে বিজেপি যে ১৮টি আসন জিতেছিল তার মধ্যে মাত্র ৬টি আসনে ২০২৪-এ জিততে পারে বিজেপি। বাকি সবই তৃণমূলের দখলে যেতে পারে। এই ৬টি আসন হল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, রানাঘাট, বনগাঁ এবং পুরুলিয়া। কিন্তু বাংলা ভাগের জিগিরে রাশ না টানলে এই ৬টি আসনও যে হাতছাড়া হবে সেটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। আর তারপরে পরেই নাড্ডার নির্দেশ দলের নেতা থেকে কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের ওপর নেমে এসেছে বলে এখন মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
এদিন বাংলা ভাগ নিয়ে দলের নেতা থেকে সাংসদ ও বিধায়কদের মুখ বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নাড্ডা। বলেছেন, দলকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আরও বেশি করে মানুষের কাছে যেতে হবে। বাংলায় বিজেপির যে সব বিধায়কেরা রয়েছেন তাঁদের রোজ সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলের সঙ্গে দেখা করতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাঁদের সুখ দুঃখের কথা শুনতে হবে। অভাব-অভিযোগ শুনতে হবে। কারও কোনও সমস্যা থাকলে তা শুনে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। অনেকক্ষেত্রে বহু মানুষের বিভিন্ন সার্টিফিকেট পেতে সমস্যা হয়। সেদিকটা লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রতি মাসে ৫ দিন এলাকা পরিদর্শন করতে হবে বিধায়কদের। ছোট ছোট ভাগে এলাকা ভাগ করতে হবে। শুধু ব্যক্তিগত সমস্যা নয় এলাকার সমস্যা সমাধানের দিকেও নজর দিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, জেলা শাসক-পুলিশ সুপার সহযোহিতা না করলে বার অ্যাসোসিয়েশানের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।