নিজস্ব প্রতিনিধি: শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যুদ্ধকালীন তৎপরতা নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীর আগামী দুই মাস ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি পুজো কমিটিগুলোকে নোটিশ পাঠালো কলকাতা পুরসভা(KMC)।আর কদিন পরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। অক্টোবর ও নভেম্বর এই দুই মাস ধরেই উৎসবের এই মরসুম চলবে। এরই মধ্যে মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার বারবাড়ন্তে বিপাকে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। এই অবস্থায় শহরের মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়াকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। সেই সঙ্গেই শহরের সব পুজো কমিটি গুলোকে নোটিশ পাঠিয়ে সতর্ক করল কলকাতা পুরসভা। মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অতীন ঘোষ কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায় চৌধুরী, কলকাতা পুরসভার চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৬ টি বোরো হেলথ এক্সিকিউটিভ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ও স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অতীন ঘোষ(Atin Ghosh) জানিয়েছেন,উৎসবের মরশুমে অর্থাৎ আগামী দুই মাস অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কলকাতা পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মীদের ছুটি বাতিল(Leave Cancel) করা হয়েছে। মশাবাহিত সংক্রমণ দমন করতে ড্রোন এর ব্যবহার করা হবে এবং ড্রোনের মাধ্যমে স্প্রে করা হবে।ডেঙ্গু মশা দমনে মশার আঁতুড়ঘর গুলিকে চিহ্নিত করতে হচ্ছে এবং সেগুলি দমন করা হচ্ছে।ডেঙ্গুতে আক্রান্ত খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই বাড়িতে ভেকট্রার কন্ট্রোল কর্মীদের নিয়ে পৌঁছাতে হবে।এখন ডাটা ভিত্তিক কাজ বন্ধ রেখে তথ্য ভিত্তিক কাজ করতে হবে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তর বাড়িতে পৌঁছে যেতে হবে।বাড়ি ও এলাকায় ডেঙ্গি মশা দমন করতে হবে। যদি কোন পুরস্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্তের এলাকায় না যায় বা সময় তো রিপোর্ট না দেয় তাহলে তাঁকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
পাশাপাশি অতীন ঘোষ (Atin Ghosh)জানিয়েছেন, শহরে এই মুহূর্তে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড কামারডাঙ্গা রেল কোয়াটারের অবস্থা খুব খারাপ।রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে। যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা খারাপ। মেডিকেল কলেজগুলির অবস্থা শোচনীয়। চলতি সপ্তাহে তিনি নিজেই সেই সব এলাকায় পরিদর্শনে যাবেন।এবছর সব থেকে বেশি ডেঙ্গু হয়েছে—-বোরো-১০— ৮১ওয়ার্ড, বোরো–১৩— ১১৮ওয়ার্ড,বোরো–১—৬ নম্বর ওয়ার্ড। পুরসভার রিপোর্টে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত জানুয়ারী মাস থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০০ ছাড়িয়েছে।। গতবছর ডেঙ্গু (Dengu) আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪০০।
কলকাতার সমস্ত পুজো কমিটিদের পুরসভার তরফ থেকে সতর্কীকরণ নোটিস পাঠানো হচ্ছে। প্যান্ডেল তৈরীর জন্য খোঁড়া গর্তগুলিতে বালি দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। বাঁশের মুখগুলি বালি দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। প্যান্ডেলের চারপাশে কোথাও জল বা আবর্জনা যাতে না জমে। অর্থাৎ, সামনে পুজো আর সেই পুজোর সময় যে মণ্ডপ তৈরী করা হবে, তাতে যে বাঁশ ব্যবহার করা হবে তার মাথায় যেন বৃষ্টি হলে কোনোরকম ভাবে জল ঢুকে না যায় তা সঠিক ভাবে করতে হবে। দুর্গাপুজোর”বাঁশ” ই যেন জীবনের বাঁশ না হয়ে যায় সেদিকেই এবার কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।