নিজস্ব প্রতিনিধি: সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে কেন বাদ বাংলার নেতাজি ও আইএনএ বিষয়ক ট্যাবলো? এই মর্মেই গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়। আগামী বুধবার ২৬ শে জানুয়ারির অনুষ্ঠান। তাই দ্রুত এই মামলার শুনানির আর্জি জানান, মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। যদিও দু’পক্ষের কথা শোনার পরেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয় এত কম সময়ে কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়, তাই মামলা খারিজ করা হচ্ছে। সোমবার কেন্দ্রের তরফে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে কিছু বক্তব্য রাখা হয়। ট্যাবলো বাতিলের বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে আদালতকে জানানো হয়েছে, নেতাজির তৈরি আজাদ হিন্দ ফৌজ (আইএনএ) নৌবিদ্রোহের সময় যোগ দিয়েছিল ভারতীয় সেনার সঙ্গে। সে সময় নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে একটি ট্যাবলো তৈরি হয়েছে। সে জন্যই আলাদা করে ওই ট্যাবলো রাখা হয়নি।
চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেতাজি ও আইএনএ’র বীরত্বের উপরে ভিত্তি করেই ট্যাবলোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তা বাতিল করে দেয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেন। কিন্তু কেন্দ্র নিজের সিদ্ধান্ত অনড় থাকে। যদিও ট্যাবলো বাতিলের প্রকৃত কারণ জানাতে পারেনি মোদি সরকার। সেই বিষয়কেই হাতিয়ার করে গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সোমবার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী প্রশ্ন করেন, ‘কোন পরিস্থিতিতে নেতাজির ট্যাবলো বাতিল হল? কেন শুধু নেতাজির ট্যাবলোকে বাদ দেওয়া হল?’ তখন প্রধান বিচারপতি জানান, ‘এত দেরি করে কেন এলেন?’ এত কম সময়ের মধ্যে আদালত কী করতে পারবে? মামলাকারীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এত কম সময়ে এই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়, সেই যুক্তিতেই মামলা খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
সোমবারের মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর আদালতে জানান, ‘সারা দেশ নেতাজিকে নিয়ে গর্ব করে। তিনি আমাদের আইকন। তাঁর হলোগ্রাম মূর্তি বসানো হয়েছে। অগস্টে মূর্তিও বসানো হবে। এটা মনে রাখতে হবে নেতাজি শুধু বাংলার নন, সারা ভারতের। সব কিছুর নিয়ম আছে। ১৯৪৬ সালে নৌ-বিদ্রোহের সময় ভারতীয় সেনার সঙ্গে আইএনএ যুক্ত ছিল। সে সময় বহু সেনা নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আইএনএ-র সেনারাও। তাঁদের প্রতি সম্মান জানিয়ে একটি ট্যাবলো তৈরি হয়েছে। সে জন্যই আলাদা করে রাজ্য সরকারের ট্যাবলো রাখা হয়নি।’