নিজস্ব প্রতিনিধি: কোভিডের(Covid) ধাক্কা কাটিয়ে আবারও স্বমহিমায় ফিরছে কুমোরটুলি(Kumortuli)। এই স্বমহিমায় ফেরার ইঙ্গিত অবশ্য দুর্গাপুজোর সময়েই মিলেছিল। তথ্য বলছে চলতি বছরের কালিপুজোয়(Kalipuja) কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা কার্যত রেকর্ড পরিমাণ কালী প্রতিমার বরাত পেয়েছেন। বিগত ৫ বছরের তুলনায় যা সর্বাধিক। কোভিডের ধাক্কা আসার আগে ২০১৯ সালে প্রায় ১২ হাজার কালী মূর্তি গড়ার অর্ডার পেয়েছিলেন শিল্পীরা। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত সংখ্যাটি ১৩ হাজারের গণ্ডী অতিক্রম করেছে। এই পরিসংখ্যান(Statistics) রীতিমতো খুশির জোয়ার এনে দিয়েছে কুমোরপাড়ায়।
কোভিডের জেরে প্রায় দুবছর প্রতিমা বিক্রিতে ভাটা পড়ে গিয়েছিল কুমোরটুলির প্রাঙ্গনে। মূর্তি গড়ার অর্ডার না পেয়ে অনেক শিল্পী রীতিমতো ভেঙে পরেছিলেন। প্রতিমা গড়ার বরাত না পেলে জীবনধারণের ও সংসার চালানোর টাকা আসবে কোথা থেকে। এই প্রশ্নই বড় হয়ে উঠে এসেছিল। এরই মাঝে কিছু প্রতিমা শিল্পী সংসার চালাতে মূর্তিগড়া ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজে হাত লাগিয়েছিলেন। কথায় আছে সুখ দুঃখ স্রোতের মতো আশে আবার চলেও যায়। তাই কুমোরপাড়াতে দুঃখের কালো মেঘ এবার কাটতে শুরু করেছে। এবছর প্রতিমা শিল্পীরা পেয়েছেন অধিক সংখ্যক কালী মূর্তি নির্মাণের বরাত। শিল্পীদের কথায়, কেউ ১০, কেউ ২০, কেউ আবার ৩০ খানা প্রতিমা গড়ার বায়না পেয়েছেন।
তাঁরা আরও জানিয়েছেন, কালীপুজোর বরাত ভাল হওয়ায় কোভিডের সময়কালের ধারবাকি শোধ করতে পারবেন তাঁরা। তাই নাওয়াখওয়া ভুলে এখন প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত কুমোরপাড়া। শিল্পীদের চোখে মুখে তৃপ্তির হাসিতে স্পষ্টত বোঝাই যাচ্ছে বিগত দিনের কথা ভুলে গিয়ে কলকাতার কুমোরপাড়া আবারও চেনা ছন্দে ফিরছে। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের দাবি, বাজারে প্রতিটি জিনিসেরই দাম বাড়ছে। মূর্তি তৈরির কাঁচা মালের দাম বেড়েছে। এই কারণে অনেকে এবারে ছোট আকারের প্রতিমা নিচ্ছেন। কিন্তু অনেকে কোভিডের সময় পুজো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এবার সেটা ঘটেনি। এটা স্বস্তির একটা বড় কারণ। পাশপাশি এবার অনেকেই নানা ডিজাইনের কালী প্রতিমার অর্ডার দিয়েছেন। ডিজাইনের ঠাকুর হওয়ায় দাম বেশি পাচ্ছেন মৃতশিল্পীরা। ফলে দুর্গার পর কালী পুজোর ব্যবসাও ভাল হচ্ছে।