নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৫ সালে প্রথম প্রয়াসেই বিশ্বের নজর কেড়েছিল বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট(Bengal Global Business Summit)। স্বাভাবিক ভাবেই তাই বেঙ্গল বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় বছরে অর্থাৎ ২০১৬ সালে সেই আগ্রহ আরও বেশি করে দেখা গিয়েছিল দেশ-বিদেশের নানান শিল্পসংস্থার মধ্যে এই সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য। কলকাতা লাগোয়া মিলনমেলা প্রাঙ্গণে(Milan Mela Prangan) এই সম্মেলন বসেছিল ২ দিনের জন্য। ৮ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি। এই সম্মেলনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল বাংলায় শিল্পনির্মাণের জন্য বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে তুলে ধরা এবং নতুন নতুন শিল্প গড়ে তোলার জন্য বাংলা কতখানি আদর্শ তা সকলের সামনে তুলে ধরা। বাম জমানার মতো বাংলা যে আর কথায় কথায় বনধ, হরতাল ডাকে না, কর্মদিবস নষ্ট করে না, এই পরিবর্তনতা তুলে ধরতে এই বিজনেস সামিট মুখ্য ভূমিকা পালন করে। শিল্পপতিদের কাছে এই সামিট থেকে বার্তা দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে বাংলা বদলে গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) হাত ধরে এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। সম্মেলনে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ভূটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে, ব্রিটেনের মন্ত্রী প্রীতি পটেল, বাংলাদেশের মন্ত্রী তোফিল আহমেদ, তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়করি, রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু, কয়লামন্ত্রী পীয়ুশ গয়াল, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রমুখ। কার্যত এই সম্মেলনের জন্য চাঁদের হাট বসে গিয়েছিল মিলন মেলা প্রাঙ্গণে। একই সঙ্গে এই সম্মেলনে অংশ নেয় চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, ইটালি, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া সহ মোট ২৬টি দেশের প্রতিনিধি ও ৬০০’র বেশি শিল্পপতি বা শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে স্টার্টআপ বিজনেস, ই-কমার্স, ডিজাইন, ইন্টেলিজেন্ট সিটিস, ইন্ডাসট্রিয়াল ইনফ্রাস্টাকচারের মতো বিষয়গুলিতে বিনিয়োগের সম্ভাবনার দিকে গুরুত্ব সহকারে আলোকপাত করা হয়। বিটুবি বা বিজনেস টু বিজনেস এবং জিটুবি বা গভের্মেন্ট টু বিজনেস আলোচনা চক্রেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল এই সম্মেলনে।
একই সঙ্গে এই সম্মেলন থেকে বাংলায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা বিনিয়োগের বার্তা দেওয়া হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ৩.৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ বার্তা যা দিয়েছিল চ্যাটার্জী গ্রুপ। হলদিয়ার বুকে একটি তৈল শোধনাগার গড়ে তোলার জন্য তাঁরা এই বিনিয়োগ করবেন বলে ঘোষণা করেন এই সম্মেলন থেকে। একই সঙ্গে বিনিয়োগের বার্তা দেয় জিন্দাল গ্রুপ, এসেল গ্রুপ, শ্রীরাম গ্রুপ, আম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপ, মারুতি সুজুকি, আইটিসি, মিৎসুবিসি, কাওয়াসাকি রিকুসো, জংটং, রিলায়েন্স ও এয়ারটেলের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের দেশী-বিদেশী শিল্পসংস্থাগুলি। এই সম্মেলনে জাপান(Japan) হয়েছিল সহযোগী দেশ এবং ফেডেরেশান অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বা ফিকি(FICCI) হয়েছিল সহযোগী সংস্থা।