নিজস্ব প্রতিনিধি: বিদ্রোহের আগুন এবার দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে বঙ্গ বিজেপিতে(Bengal BJP)। হাজার চেষ্টা করেও, ভয় দেখিয়েও, হুমকি ধমকি দিয়েও, দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দিয়েও সেই সব বিদ্রোহ আর দমন করতে পারছে না সুকান্ত অ্যান্ড অমিতাভ ও মালব্যের কোম্পানি। থুড়ি বঙ্গ বিজেপি। কার্যত নিত্যদিনই কোনও না কোনও জেলার বিজেপি নেতারা বিদ্রোহ করে বসছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar) ও তাঁর দুই চালিকাশক্তি অমিতাভ চক্রবর্তী ও অমিত মালব্যের বিরুদ্ধে। এই ৩জনের বিরুদ্ধেই বার বার অভিযোগ উঠছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার ও টাকার বিনিময়ে পদ বিলি করার। রবি সকালে বড়সড় বিদ্রোহ ঘটে গেল উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বিজেপির বারাসাত(Barasat) সাংগঠনিক জেলা কমিটিতে। সেখানে একযোগে এদিন গণইস্তফা(Mass Resignation) দিলেন কমিটির ১৫জন সদস্য। শুধু ইস্তফা দেওয়াই নয়, তাঁরা এদিন রীতিমত তোপ দেগেছেন বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের পাশাপাশি দলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধেও।
রবিবার বিজেপির বারাসাত জেলা কমিটির ৬৯ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জন ইস্তফা দিয়ে দিলেন কমিটি থেকে। ইতিমধ্যেই তাঁদের পদত্যাগের চিঠি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। সেই চিঠিতে বিজেপির বারাসাত সাংগঠনিক জেলার বর্তমান সভাপতি তাপস মিত্রর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন পদত্যাগীরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘কামিনী কাঞ্চন’-এর বিনিময়ে তাপসবাবু বিভিন্ন জায়গায় নিজের পছন্দের লোকদের পদ বিলি করছে। জেলার পুরানো ও বর্ষীয়ান সদস্যদের কোনও গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূলের সঙ্গে দলের জেলা সভাপতির গোপন আঁতাতের অভিযোগও তুলেছেন পদত্যাগী বিজেপি নেতারা। বিদ্রোহী বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, জেলা সভাপতি তাপস মিত্র দীর্ঘদিনের বরিষ্ঠ কার্যকর্তাদের সম্মান দিচ্ছেন না। অযোগ্য লোকেদের মুড়ি-মুড়কির মতো পদ বিলি করছেন। ‘কামিনী কাঞ্চন’ ও অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য ব্যক্তিদের পুরভোটের টিকিট বিলি করেছেন তিনি। শাসকদলের নেতাদের অঙ্গুলিহেলনে জেলার সংগঠনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছেন। যদিও দলের জেলা তাপস মিত্র সভাপতি বিদ্রোহী বিজেপি নেতাদের তোলা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিন যারা ইস্তফা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, আশীষ মজুমদার, প্রতাপ চট্টোপাধ্যায়, চিত্ত বসাক, সুভাষচন্দ্র রায়, নীলিমা দে সরকার, সজল দাস-সহ অন্যান্যরা। তাঁরা যে চিঠি সুকান্তকে পাঠিয়েছেন তাতে লেখা আছে, ‘তাপস মিত্র যেভাবে আক্রোশের বশবর্তী হয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের দীর্ঘদিনের সক্রিয় ও বরিষ্ঠ কার্যকর্তাদের সমস্ত দলীয় কর্মসূচি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন, তাঁদের যোগ্য সম্মান ও উপযুক্ত সাংগঠনিক স্থান না দিয়ে জেলা সভাপতির কাছের অযোগ্য লোকদের মুড়ি মুড়কির মতো পদ বিলি করেছেন কামিনী-কাঞ্চনের বিনিময়ে, যেভাবে অর্থের বিনিময়ে পুরভোটের টিকিট অযোগ্য ব্যক্তিদের দিয়েছেন এবং শাসকদলের নেতাদের অঙ্গুলিহেলনে জেলার সংগঠনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছেন-যার ফল স্বরূপ বিগত পুরভোটে জেলার চার পুরসভার ১১০ টি সিটের মধ্যে একটিকেও জয়লাভ না করতে পারা ও তৃতীয় স্থানে যাওয়ার লজ্জাজনক হারের প্রতিবাদে জেলা কার্যকরি কমিটি থেকে পদত্যাগ করলাম।’
একই সঙ্গে এদিন সামনে এসেছে সংগীত শিল্পী ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি না নিয়েই তাঁর নাম তুলে দেওয়া হয়েছে বিজেপির রাজ্য কমিটিতে। আর তা নিয়েই এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিল্পী। জানিয়েছেন, অফিশিয়ালি বিষয়টি এখনও তাঁকে জানানো হয়নি। তবে কমিটির তালিকা তাঁর হাতে এসেছে। এরপরেই এ বিষয়ে জেপি নাড্ডা ও সুকান্ত মজুমদারকে মেল করেছেন তিনি।