নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তরপ্রদেশের(Uttar Pradesh) বুকে সোম সকালে জাতীয় রাজনীতির এক অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। ৮২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা তথা উত্তরপ্রদেশের ৩ বারের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদব(Mulayam Singh Yadav)। তাঁর পুত্র তথা অখিলেশ যাদব(Akhilesh Yadav) এদিন টুইট(Tweet) করে এই তথ্য জানিয়েন। মুলায়মের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে জাতীয় রাজনীতির আঙিনায়। মুলায়মের কর্ম ও রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লি। বাংলা সেই অর্থে কোনও দিনই তাঁর কর্মক্ষেত্র হয়ে ওঠেনি। কিন্তু বাম বাংলায় বহুবার পদার্পণ ঘটেছিল মুলায়মের। শুধু তাই নয়, বাংলার ৫ বারের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে(Jyoti Basu) প্রকাশ্যেই নিজের গুরু বলে মানতেন মুলায়ম। সেই সূত্রে বামেদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল খুবই ভাল। এমনকি বাংলায় বামফ্রন্টের শরিক দল হয়েছিল মুলায়মের সমাজবাদী পার্টি।
মুলায়মের সঙ্গে জ্যোতিবাবুর সম্পর্ক ছিল দেখার মতো। ১৯৯৬ সালে সিপিএম পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্তের জেরে যখন প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি জ্যোতি বসু, সেই সময় প্রথম সর্বসমক্ষে সিপিএমের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিলেন এই মুলায়মই। বলেছিলেন, ‘আমি নিশ্চিত, জ্যোতি বসুকে তাঁর পার্টি যদি প্রধানমন্ত্রী হতে দিত, তাহলে দেশের অবস্থা আজ অনেক ভাল হত। ওই পদে বসে তিনি যে উদাহরণ তৈরি করতেন, তা অনুসরণ করতেন বাকিরা। এটা সিপিএম পার্টির একটি দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। কারণ বসুর মতো নেতা সব সময়ই পার্টি-লাইনের ঊর্ধ্বে হন।’ ১৯৮৭-তে লখনউতে তৃতীয় ফ্রন্টের একটি সুবিশাল সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। রাজীব গান্ধীর বিরোধিতা করে ডাকা সেই সমাবেশে আমন্ত্রিত ছিলেন দেশের তাবড় অকংগ্রেসি ও অবিজেপি নেতৃত্ব। সেই সমাবেশের প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন মুলায়ম। ‘নেতাজি’ নিজে বার বার স্বীকার করেছেন, সেই সমাবেশ থেকেই রাজনীতির প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিলেন এক জন। তিনি জ্যোতি বসু। মূলত, সেই সময় থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে তৃতীয় ফ্রন্টের রাজনীতির অন্যতম কাণ্ডারি হয়ে ওঠা শুরু মুলায়মের। এই মুলায়মের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে বাংলার বাম শিবিরেও।