নিজস্ব প্রতিনিধি: সজাগ হোন, সতর্ক হোন। এবার থেকে আর কলকাতার(Kolkata) বুকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের(Victoria Memorial) ৩ কিলোমিটারের মধ্যে কোথাও উনুন জ্বেলে রান্না বা অন্য কোনও কাজ করা যাবে না। জ্বালানো যাবে না কয়লা কিংবা কাঠকয়লার উনুন(Charcoal Furnace)। ভিক্টোরিয়ার সৌধকে দূষণের(Pollution) হাত থেকে বাঁচাতে ফের এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা পুরনিগমকে(Kolkata Municipal Corporation) মৌখিক নির্দেশে জানিয়েছে, তারা যেন বিষয়টি নিশ্চিত করে। ভিক্টোরিয়ার চার দিকে সবুজ বলয়-সহ আরও কিছু নিয়ম চালুর আবেদন জানিয়েছিলেন মামলাকারী তথা পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। বেঞ্চ তাঁকে লিখিত ভাবে তা জমা দিতে বলেছে। আগামী শুনানিতে এই মামলায় চূড়ান্ত নির্দেশ দিতে পারে হাইকোর্ট।
ভিক্টোরিয়া সৌধকে দূষণ থেকে বাঁচাতে ঐতিহাসিক এই সৌধের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে আগুন না জ্বালানোর দাবি দীর্ঘদিনের। কলকাতা পুরনিগমের আইনজীবীকে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ঐতিহাসিক সৌধের চার দিকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও হোটেল-রেস্তরাঁয় যাতে কোনও ভাবে উনুন জ্বেলে রান্না না করা হয়, তা নিশ্চিত করতেই হবে। খোলা আকাশের নীচে যাতে অস্থায়ী দোকান বা স্টলে এই ধরনের দূষণ সৃষ্টিকারী কাজকর্ম না হয়, তাও দেখতে হবে। এই নির্দেশ আগেও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সেই জন্যে আগামী শুনানিতে কলকাতা পুরনিগমকে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানায় বেঞ্চ। ধর্মতলার বাস টার্মিনাস এবং অন্য দূষণের কারণে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও হেরিটেজ সৌধের ক্ষতি হচ্ছে বলে ২০০৭ সালে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই সময় ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ৬ মাসের মধ্যে বাস টার্মিনাস ওই চত্বর থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
সেই রায় নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও সেখানেও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত, তবে কোনও সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। সেই নির্দেশের পরে বহু বছর পার হয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছু না হওয়ায় ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুভাষ। এর আগের শুনানিগুলিতে রাজ্য আশ্বাস দিয়েছে, বাস টার্মিনাস ধর্মতলা চত্বর থেকে সরানো হবে। সুভাষ দত্ত আদালতে আবেদন করেন, ট্র্যাফিক ব্যবস্থা এমন করা উচিত যাতে ভিক্টোরিয়া চত্বরে যানবাহন সিগন্যালে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে না পারে। এর আগে ঠিক হয়েছিল ভিক্টোরিয়ার চার দিকে সবুজ বলয় বা গ্রিন করিডর তৈরি করা হবে। যাতে দূষণ কিছুটা হলেও কমানো যায়। বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী শুনানির আগে সুভাষকে তাঁর আবেদন লিখিত ভাবে জানাতে হবে। সুভাষের দাবি, তাজমহল বাঁচাতে ওই সৌধের আশপাশে সব ধরনের মোটরযান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভিক্টোরিয়ার মতো সৌধ বাঁচাতেও তা করা দরকার।