নিজস্ব প্রতিনিধি: সকলের স্বপ্ন থাকে, আবেগ থাকে, ইচ্ছা থাকে, মনের মানুষ রঙের দিনে এসে নিজে হাতে রাঙিয়ে দিয়ে যাবে। লাজুক অধোবদনে সেই রঙে ভাসবে মন আর স্বপ্ন। খুশিতে চোখ দিয়ে নামবে ধারাপাত। নাহ সব সময় স্বপ্ন সত্যি হয় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা স্বপ্ন হয়েই থেকে যায়। বিশেষ করে তা যদি হয় একতরফা। তখন কিন্তু রঙ মাখাতে গেলে বড় বিপত্তির আশঙ্কা থেকেই যায়। ঠিক যেমনটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার(Kolkata) রিজেন্ট পার্ক(Regent Park) থানার নতুন পল্লি এলাকায়। সেখানে দোলের দুপুরে বন্ধুর হাতে খুন(Murder) হয়ে গিয়েছেন দিলীপ চৌহান(Dilip Chauhan)। পুলিশ ওই ঘটনায় খুঁজে বেড়াচ্ছে মূল অভিযুক্ত সুজিত মল্লিক(Sujit Mallik) নামের এক যুবককে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই এবার পুলিশের হাতে বিস্ফোরক তথ্য এসে পৌঁছেছে। তাঁরা জানতে পেরেছেন দিলীপ দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছিলেন সুজিতের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে। কিন্তু সুজিতের স্ত্রী পাত্তা দেননি। গতকাল রঙ মাখানোর অছিলায় সুজিতের স্ত্রীকে রঙ মাখাতে মাখাতে বিয়ের প্রস্তাব দেয় দিলীপ। আর সেই কথা কানে যেতেই বন্দুক জোগাড় করে দিলীপকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সুজিত। আর তাতেই ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছে দিলীপের।
দোলের(Dolyatra) দিন সকালে সুজিতের বাড়িতে গিয়েছিল দিলীপ। পেশায় বাদাম বিক্রেতা দিলীপ আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। গতকাল সে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে সুজিতের বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে বসেছিল মদ্যপানের আসর। সেই সময়েই মদ্যপ অবস্থায় দিলীপ একরকম জোর করেই রঙ মাখায় সুজিতের বউকে। অভিযোগ রঙ মাখানোর নামে সুজিতের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করার পাশাপাশি তাঁকে বিয়ের প্রস্তাবও দেয় দিলীপ। আর তাতেই রাগ মাথায় চড়ে সুজিতের। সেই সময়েই দুইজনের তীব্র বচসা বাঁধে। বন্ধুদের উপস্থিতিতে সেই সময়কার মতো বিবাদ থামলে সুজিতের বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে যায় দিলীপ। দুপুরে সুজিত কোথাও থেকে বন্দুক জোগাড় করে দিলীপকে গুলি করে। তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও সেখানেই সন্ধ্যাবেলায় চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও এখনও সুজিতের নাগাল পায়নি। কার্যত গুলি চালনার ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে সুজিত। বন্ধ রয়েছে তার মোবাইল ফোনও। পুলিশের প্রাথমিক ধারনা সে ভিন রাজ্যে পালিয়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই এদিন সামনে এসেছে রঙ মাখাতে মাখাতে সুজিতের স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য তো ছড়িয়েইছে, সেই সঙ্গে কিছুটা হলেও দিলীপের দিকেও আঙুল উঠতে শুরু করে দিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, চোখের সামনে স্ত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ও বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে কোন পুরুষই বা চুপ করে বসে থাকতে পারে! যা হওয়ার সেটাই হয়েছে।