নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাজুড়ে ঝড় তুলেছিল ‘খেলা হবে’(Khela Hobe) শ্লোগান। সেই শ্লোগান এখন আবার ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই শ্লোগানের প্রকৃত স্রষ্টা কে। তিনি বাংলাদেশের(Bangladesh) সাংসদ তথা বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ শামীম ওসমান(Shamim Osman)। সম্প্রতি তিনি এসেছিলেন কলকাতায় চিকিৎসার প্রয়োজনে। তাঁর ৩-৪দিনের এই ছোট্ট সফরে তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি, ছেলে অয়ন ও মেয়ে অঙ্গনা। ১ এপ্রিল তিনি আবার ফিরে গেলেন ঢাকায়। কিন্তু সঙ্গে নিয়ে গেলেন কলকাতার(Kolkata) অনেক সুখস্মৃতি আর অবশ্যই এখানকার টাটকা অক্সিজেন।
কেমন কাটলো ওসমান সাহেবের এই সংক্ষিপ্ত কলকাতা সফর! সেটা নিজের মুখেই জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘কলকাতা শহরে যেখানেই গিয়েছি সেখানেই আমাকে ঘিরে সেলফি তুলতে তরুণ-তরুণীরা ছুটে আসছেন দলে দলে। বাদ যায়নি সেখানকার গণমাধ্যমের চোখও। তাঁরাও আমাকে নিয়ে খবর করেছেন। শহরের নিউমার্কেট এলাকার আশপাশে কিংবা হোটেলের লবি যেখানেই পা রেখেছি সেখানেই আমাকে ঘিরে এই উন্মাদনা দেখেছি। ঢাকায় এমন ঘটনা স্বাভাবিক হলেও কলকাতা শহরের জন্য এমন দৃশ্য সত্যিই বিস্ময়কর।মানুষ আমাকে চিনতে পারছে জানতে পারছে এটাই তো সব থেকে বড় পুরষ্কার। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই এগিয়ে এসে খেলা হবে শ্লোগানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে, আমার সঙ্গে সেলফি তুলেছে।’
কলকাতা কেমন লাগলো ওসমান সাহেবের? তিনি জানিয়েছেন, ‘এই শহরের উষ্ণতা অনেকটাই বিশুদ্ধ অক্সিজেনের মতো। আমি যখন কলকাতায় থাকি, যেখানেই যাই, কেউ না কেউ বাংলাদেশে তাদের শেকড় সম্পর্কে নস্টালজিকভাবে কথা বলে। আমি অনুভব করতে পারি যে, তাঁরা তাঁদের শেকড় দেখতে কতটা আগ্রহী। আমি ভারত সম্পর্কেও একই রকম অনুভব করি। এমন দিন হয়তো আসবে, যখন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করার জন্য ভিসার প্রয়োজন হবে না। এখন সময় এসেছে সেই সেতুবন্ধের, যেমনটি হতে পারে সেনজেন ভিসার মতোই। এখানকার তরুণ-তরুণীরা আমাদের দেশের তরুণসমাজের মতোই যথেষ্ট রাজনৈতিক সচেতন। তাঁরা আমাকে দেখে চিনতে পারছে, আমাকে ঘিরে রীতিমতো সেলফি উৎসবে মেতে উঠছে, অনেকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশে তাঁদের উত্তসূরিদের বিষয়ে আলাপ করেছে, সব মিলিয়ে আমি অভিভূত। একই সঙ্গে আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া তিনি আমার মতো একজন নগণ্য মানুষকে এই বিদেশের মাটিতেও এতটা জনপ্রিয়তা আর সম্মান দিয়েছেন বলে।’
অনেকেই জানেন না ওসমান সাহেবের পরিবারের শিকড় ছড়িয়ে আছে এপার বাংলাতেও। তাঁর মা প্রয়াত ভাষাসৈনিক নাগিনা জোহা ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের বাসিন্দা। তাঁর মামা আবুল হাসিম ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। ওসমান সাহেবের অন্য আত্মীয়দের মধ্যে ছিলেন মনসুর হাবিবুল্লাহ, যিনি এ রাজ্যের বিধানসভার স্পিকার ছিলেন। এছাড়াও দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী এ বি এ গণি খান চৌধুরী ছিলেন ওসমান সাহেবের মায়ের আত্মীয়। তাই ওসমান সাহাবের কাছে রাজনীতি নতুন কোনও ঘটনা নয়। যদিও তিনি বা তাঁর ভাই কেউই রাজনীতিতে আসতে চাননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড তাঁদের জীবনকে চিরতরে বদলে দিয়েছে। ওসমান সাহেবকেও তাই বিচরণ করতে হচ্ছে রাজনীতির আঙিনায়।