নিজস্ব প্রতিনিধি: বড়সড় ক্ষোভ মাথাচাড়া দিল বঙ্গ বিজেপিতে(Bengal BJP)। সেই ক্ষভের নেপথ্যে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar)। যে ঘটনা ঘিরে এই ক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে তা অবশ্য বছর ৩ আগের ঘটনা। অভিযোগ উঠেছে সুকান্ত তৃণমূলের(TMC) সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করে চলেছেন। তামাক খাচ্ছেন রাজ্যের শাসক দলের হাতে। কার্যত তৃণমূলের নির্দেশ মতোই তিনি বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কোনঠাসা করে চলেছেন যাতে বাংলার মাটিতে কোনওভাবেই পদ্মফুল শিকড় ছড়াতে না পারে। আর এই সব অভিযোগের ভিত্তি হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে সুকান্তবাবুর স্ত্রীর বদলির ঘটনা। বঙ্গ বিজেপির একাংশের দাবি, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে নিজের স্ত্রীর বদলি বাড়ির কাছের স্কুলে করিয়েছেন সুকান্ত। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ সুকান্ত। তাঁর দাবি, তিনি বাড়ির কাছের স্কুলে স্ত্রীর বদলি চেয়ে কাউকে কোনও সুপারিশ করেননি। যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ বিক্ষুব্ধ বঙ্গ বিজেপির নেতা থেকে কর্মীরা। তাঁরা এই ঘটনা সামনে রেখে অবিলম্বে রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদ থেকে সুকান্তের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
ঠিক কী হয়েছে? জানা গিয়েছে, রাজ্যের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট লোকসভা আসন থেকে উনিশের ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন সুকান্ত। সেই সময় তিনি ছিলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। সেই সূত্রেই তিনি সস্ত্রীক ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতেন মালদার ইংরেজবাজার শহরে। সেই সময় তাঁর স্ত্রী কোয়েল চৌধুরী(Koyel Chowdhury) ওই জেলারই একটি সরকারি স্কুলে শিক্ষিকা ছিলেন। যদিও সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরে সুকান্ত বালুরঘাটে তাঁর নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। অভিযোগ উঠেছে, সেই সময় সুকান্ত রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ধরে নিজ স্ত্রীর বদলি ঘটান সুকান্ত। সেই আবেদন নাকি আবার এসেছিল বিজেপির তরফে। তারপরেই বালুরঘাটের সানাপাড়া হাইস্কুলে বদলি হয়ে যান সুকান্ত ঘরণি। আর এই তথ্য সামনে আনার পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির সুকান্ত বিরোধীদের দাবি, সুকান্ত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনেরও সক্রিয় সদস্য ছিলেন। আর এখন সেই তৃণমূলের হাতে তামাক খেয়ে বঙ্গ বিজেপির তৃণমূল বিরোধী নেতাদের কোনঠাসা করতে উঠে পড়ে লেগেছেন।
যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ সুকান্ত। তাঁর দাবি, ‘আমার স্ত্রীর বদলি মিউচুয়াল ট্রান্সফারের মাধ্যমে হয়েছিল। কোনও সুপারিশের মাধ্যমে এই আপস বদলি হয়নি।’ আবার সুকান্তর দাবি পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়(Partha Chatterjee)। পার্থবাবু জানিয়েছেন, ‘আমার কাছে সেই সময় ওঁর স্ত্রীর বদলি নিয়ে আবেদন এসেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজনীতির রং দেখে না। তাই ওঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে শিক্ষাদফতর কোয়েল চৌধুরীকে মালদহ থেকে বালুরঘাটের স্কুলে বদলিতে সিলমোহর দিয়েছিল। শিক্ষাদফতরের অনুমোদন ছাড়া জেনারেল কিংবা মিউচুয়াল ট্রান্সফার সম্ভব নয়।’ বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আবার জানিয়েছেন, ‘আমি কোনও সুপারিশ করিনি। তবে সেই সময় পার্টির অন্দরে সুকান্তবাবুর স্ত্রীর বদলি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেটা আমার কানে এসেছিল। পার্টির অন্য কেউ করে থাকতে পারেন।’