নিজস্ব প্রতিনিধি: খাস কলকাতায় প্রথম মহাকাশের নানান প্রাপ্য বস্ত নিয়ে জাদুঘর। আর সেই জাদুঘরে গিয়ে মঙ্গল গ্রহের পাথর, মহাকাশের নানা বস্তু দেখতে ও ছুঁতে পারবেন আপনিও। ছোঁয়া যাবে মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানে থাকা গ্রহাণুদের সাম্রাজ্য- গ্রহাণুপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’) থেকে ছিটকে বেরিয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহাণুদের শরীরের বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য, দুর্মূল্য অংশও। সবটাই ঘটবে আপনার হাতের নাগালের মধ্যে। পৃথিবী থেকে প্রায় সাড়ে ৩৯ কোটি কিলোমিটার দূরে থাকা মঙ্গলের শিলাখণ্ডও ছুঁতে পারবেন। সবটাই হবে কলকাতায়। স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে কলকাতার বুকে খোলা হয়েছে ভারতের প্রথম প্রথম মহাকাশ সংগ্রহশালা। যা জানুয়ারি মাসে খুলে যাবে জনসাধারণের জন্য। কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স (আইসিএসপি)’-এর অধিকর্তা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অধ্যাপক সন্দীপ চক্রবর্তীর ইচ্ছায় ঘটেছে এই মহৎ কাজ।
জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী মেট্রো স্টেশনের ঢিল ছোড়া দূরত্বে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসে আইসিএসপি-র ৩৭ হাজার বর্গ ফুট জমির একাংশে নির্মিয়মান পাঁচ তলা ভবনের এক তলায় গড়ে তোলা হচ্ছে এই মহাকাশ সংগ্রহশালা। প্রাথমিক ভাবে ৩ হাজার বর্গ ফুট জমির উপর। সংগ্রহশালা গড়ে তোলার জমি ও তার পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৪০ লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য করেছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু সেই সংগ্রহশালায় যা রয়েছে তার বেশিরভাগতাই সন্দীপ বাবুর সংগ্রহ করা। তা মঙ্গলের দুর্লভ পাথর আর পৃথিবীর দিকে বিভিন্ন সময়ে ছিটকে আসা বিভিন্ন গ্রহাণুর শরীরের দুষ্প্রাপ্য, দুর্মূল্য অংশ আর যাই হোক না কেন। রয়েছে রাশি রাশি গ্রহাণু ও মিউজিয়ামে থাকছে আমেরিকার আরিজোনার মরুভূমিতে ৫০ হাজার বছর আগে আছড়ে পড়া বিশাল একটি উল্কার অংশ। উল্কাটি আছড়ে পড়ার ফলে ৫০ হাজার বছর আগে আরিজোনা মরুভূমিতে সুবিশাল একটি গর্ত তৈরি হয়েছিল। এখন যার নাম ‘ব্যারিঞ্জার ক্রেটার’। যার গভীরতা ৫৬০ ফুট। সেই গর্তের ভিতর থেকেই পরে পাওয়া যায় সেই উল্কার শরীরের নানা অংশ। তারই একটি অংশ থাকছে কলকাতার মহাকাশ সংগ্রহশালায়। যার ওজন ১৭৩ গ্রাম।
কলকাতায় ভারতের প্রথম মহাকাশ সংগ্রহশালায় থাকছে মোট ৭টি বিভাগ। ‘মেটিওরাইট সেকশন: ভিজিটার্স ফ্রম স্পেস’, ‘এক্স-রে অ্যাস্ট্রোনমি সেকশন,’ ‘স্যাটেলাইটস অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেন্টেশন্স’, ‘বেলুন বোর্ন সায়েন্স’, ‘মিনি প্ল্যানেটারিয়াম’, ‘টেলিস্কোপ মেকিং ওয়ার্কশপ’ ও ‘আয়নোস্ফেরিক রিসার্চ অ্যান্ড স্পেস রেডিয়েশন’। জানুয়ারি মাসেই খুলে গেলে নতুন ইতিহাস গড়বে বাংলা।