নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) মাটিতে বিজেপি(BJP) ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পেয়েছিল মাত্র ৩টি আসন। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্য থেকেই তাঁরা পেয়েছিল ১৮টি আসন। বাংলার মাটিতে বিজেপি এই সাফল্য নজর কেড়েছিল গোটা দেশের। তারপরেই শ্লোগান উঠেছিল, ‘আব কে বার ২০০ পার’। যদিও সেই শ্লোগান আর বাস্তবায়িত হয়ে ওঠেনি। একুশের ভোটযুদ্ধে বাংলার মানুষই মাত্র ৭৭টি আসনেই দৌড় থামিয়ে দিয়েছিল বিজেপির। এবার যখন দোরে ২৪’র ভোট(General Election 2024) কড়া নাড়ছে তখন দলকে বেশ বড়সড় অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়(Tathagata Roy)। সাফ জানিয়ে দিলেন, ২৪’র লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মাটিতে দলের ফল ২০২১’র নির্বাচনের থেকেও খারাপ হতে চলেছে। যদিও তিনি এটা বলে দেননি যে, সেই খারাপ ফলের মধ্যেও বিজেপি বাংলা থেকে কটি আসনে জয়ী হবে।
এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার ট্যুইট করে লেখেন, ‘নির্বাচনে নামার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ৩০% মুসলমান ভোট আঁচলে বেঁধে নামেন। অতএব, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির একমাত্র উপায় হচ্ছে ৭০% হিন্দু ভোটকে একত্রিত করা। এই সরল সত্যটিকে না বুঝে অঞ্চল কমিটির প্রেসিডেন্ট আর মণ্ডল কমিটির সেক্রেটারিকে হবে তা নিয়ে মেতে থাকলে অবস্থা ২০২১-এর চাইতেও খারাপ হবে।’ কার্যত তথা ধাক্কা দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির সংগঠনের বেহাল দশা ও দলের নেতাদের মধ্যে পদপ্রাপ্তি ঘিরে বেড়ে ওঠা গোষ্ঠীকোন্দলের ঘটনাকে। বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তথা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কেউই তথাগতকে বা তাঁর মতামতকে এখন আর পাত্তা দেন না। কিন্তু মাঝেমধ্যেই এই ধরনের ট্যুইট করে তথাগত বঙ্গ বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার পাশপাশি তাঁদের বেআব্রু দশাকে আরও একটু বেআব্রু করে দেন। এই যেমন সপ্তাহ খানেক আগেই দলের বিরুদ্ধে ফোঁস করে উঠেছিলেন বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতা। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ‘পদ’ নিয়েই মেতে রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে জন্য যখন আর হাতেগোনা কয়েক মাস বাকি রয়েছে তখনও তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে ঝড় তোলার জন্য একটি নির্দিষ্ট ইস্যুও বঙ্গ বিজেপির হাতে নেই।
এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও দাবি ছিল, শুধু দলীয় পদ নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। মানুষের কাছে পৌঁছনো নয়, দলের পদ কুক্ষিগত করতেই ব্যস্ত কার্যকর্তারা। সংগঠন নিয়েও দলের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে। তথাগত জানিয়েছিলেন, ‘সংগঠন ধরে রাখতে দলের নীতি ও প্রচারের নির্দিষ্ট কিছু বিষয় থাকা দরকার রয়েছে। বর্তমানে দলের কোনও মুখপত্র নেই। দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা নেই কারোরই। কে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং মণ্ডলের দায়িত্ব পাবেন সেটা নিয়ে ব্যস্ত সবাই। ঘটনা হচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে পদ্ম বিরোধী দলগুলি সরব হবে সেটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে বিরোধীদের পাশাপাশি খোদ বিজেপির নেতা থেকে বিধায়কেরাও দলের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। অসীম সরকার থেকে তথাগত রায় মায় অনুপম হাজরাও মুখ খুলছেন দলেরই বিরুদ্ধে। আর সেই সব ঘটনার জন্য বার বার চরম অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপিকে। সবার বক্তব্য কিন্তু একই, ২৪’র ভোটে বিজেপির খারাপ ফল হবে বাংলার মাটিতে।