এই মুহূর্তে




‘মর্মাহত’: আদালতে জুতো ছোঁড়া নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিনিধি: সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে জুতো ছোঁড়ার ঘটনা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের আভ্যন্তরীন কক্ষে জুতো ছোঁড়ার চেষ্টাকে ‘ভুলে যাওয়া অধ্যায়’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। লজ্জাজনক ঘটনাটির ৪৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর নীরবতা ভেঙেছেন প্রধান বিচারপতি।

আদালতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, “সোমবার যা ঘটেছিল তাতে আমি এবং আমার ‘লার্নেড ব্রাদার’  মর্মাহত। আমাদের জন্য এটি একটি ভুলে যাওয়া অধ্যায়।” দিনের কার্যক্রম চলাকালীন বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঁইয়ার পাশে বসে থাকা প্রধান বিচারপতি আর কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি যে উজ্জ্বল ভূঁইয়াকেই ‘লার্নেড ব্রাদার’ বলেছেন তা আর বলে দিতে হয় না।

তবে বিচারপতি ভূঁইয়া জুতো ছোঁড়ার মতো নিন্দনীয় কাজের বিরুদ্ধে নিজের মন্তব্য স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, “এ বিষয়ে আমার নিজস্ব মতামত আছে। উনি ভারতের প্রধান বিচারপতি – এটা কোনও রসিকতার বিষয় নয়। বিচারপতি হিসেবে বছরের পর বছর ধরে আমরা এমন অনেক কাজ করে আসছি যা অন্যরা হয়তো যুক্তিসঙ্গত মনে করবে না, কিন্তু এতে আমরা যা করেছি সে সম্পর্কে আমাদের মতামতের কোনও পরিবর্তন হয় না।” আদালতে উপস্থিত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এই হামলার নিন্দা করে বলেছেন, “এই কাজ ক্ষমার অযোগ্য।”

সোমবার সকালে প্রধান বিচারপতি গাভাই যখন প্রথম মামলার শুনানি শুরু করেন, ঠিক তখনই জুতো ছোঁড়ার ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রাকেশ কিশোর নামে একজন প্রবীন আইনজীবী হঠাৎ নিজের জুতো খুলে বেঞ্চের দিকে ছুঁড়ে মারেন এবং চিৎকার করে বলেন, “সনাতন কা আপমান নহি সহেঙ্গে” (আমরা সনাতন ধর্মের অপমান সহ্য করব না)।

আদালতের অভ্যন্তরে শুরু হয় হট্টগোল। কিন্তু হৈচৈয়ের মধ্যেও প্রধান বিচারপতি শান্ত থেকে বিচারকার্য চালিয়ে যান। বরং আদালতের কর্মীদের বলেন, “এসব দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। আমি বিভ্রান্ত নই। এসব বিষয় আমাকে প্রভাবিত করে না।” সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। জানা গিয়েছে, প্রধান বিচারপতি রেজিস্ট্রারকে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না গ্রহণ করার অনুরোধ করেছিলেন। দিল্লি পুলিশ রাকেশ কিশোরকে আদালত প্রাঙ্গণের ভিতরে কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। পরে তার জুতো ফেরত দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওইদিন সন্ধ্যায় প্রধান বিচারপতির সাথে কথা বলেন এবং এই ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেন।
এই ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (বিসিআই) অ্যাডভোকেট রাকেশ কিশোরকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়।

গত সেপ্টেম্বর মাসে মধ্যপ্রদেশের ইউনেস্কো তালিকাভুক্ত খাজুরাহো মন্দির প্রাঙ্গনে ভগবান বিষ্ণুর একটি মুণ্ডহীন মূর্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে শুনানির সময় প্রধান বিচারপতির করা মন্তব্য ঘিরে সনাতনীদের মধ্যে বিতর্ক চলছিল। তার মধ্যেই হয় এই জুতো হামলা। একজন আবেদনকারী বিষ্ণুমূর্তিটি পুনর্নির্মাণ এবং পুনরায় স্থাপন করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। তখন প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেছিলেন, “যান আপনার দেবতাকে নিজেই কিছু করতে বলুন। আপনি নিজেকে ভগবান বিষ্ণুর বড় ভক্ত বলে দাবি করছেন, তাহলে আপনি প্রার্থনা করুন।”এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। কেউ কেউ অভিযোগ করেন যে গাভাই হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাসের মূলে আঘাত করেছেন।
প্রত্যুত্তরে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমি সকল ধর্মকে সম্মান করি।”

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

বৃহস্পতিতে দশমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নীতিশ কুমার, কারা হবেন নতুন সরকারে মন্ত্রী?

অন্ধ্রে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ! শীর্ষনেতা হিডমার মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও ৭ মাওবাদী খতম

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মমতার

মর্মান্তিক! অস্ট্রেলিয়ায় ৮ মাসের গর্ভবতী ভারতীয় মহিলাকে পিষে মারল বিএমডাব্লু গাড়ি

দিল্লি বিস্ফোরণে নাম জড়ানো আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে গ্রেফতার করল ইডি

হাসিনার ফাঁসির রায়ের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দিল্লিতে ইউনূসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা  

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ