17ºc, Mist
Thursday, 2nd February, 2023 4:17 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল: জুতো সেলাই চণ্ডীপাঠ। না ভুল বললাম। স্কুল খোলা থেকে বন্ধ করা, জাতীয পতাকা টাঙানো থেকে নামানো। টানা ক্লাস করার পাশাপাশি শৌচালয় পরিস্কার রাখার মতো ঝক্কি- সব একার হাতেই সামলাতে হচ্ছে একমাত্র শিক্ষককে। শুনতে গল্প হলেও এমন দৃশ্যের সাক্ষী বরিশালের হিজলা উপজেলার প্রত্যন্ত মেমানিয়া চরাঞ্চলের ৩ নম্বর ডিগ্রিচর আলাবক্স হাওলাদার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক পড়ুয়া। সব দিক একার হাতে সামাল দিয়ে আধুনিক যুগের সব্যসাচী হয়ে উঠেছেন সহকারী শিক্ষক মনির হোসেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেই দেশের প্রতি গ্রামে একটি সরকারি বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা করেছিলেন। আট বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতো বরিশালের হিজলা উপজেলার ৩ নম্বর ডিগ্রিচর আলাবক্স হাওলাদার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মনির চৌকিদারের দান করা জমিতেই গড়ে উঠেছিল বিদ্যালয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই খুঁড়িয়ে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। প্রধান শিক্ষক ও ৪ সহকারী শিক্ষকসহ মোট ৫টি পদ থাকলেও ৪টি পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষক মনির হোসেনকেই একার হাতে সব কিছু সামাল দিতে হচ্ছে।
তাই দুই শিফটে চলছে স্কুল। প্রথম শিফট সকাল ৯টা থেকে ১২টা এবং দ্বিতীয় শিফট সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা। দুই শিফটে একেক শ্রেণিতে একটি করে টানা ৬টি ক্লাশ নেওয়া, ১২টায় দুই শিফটের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সঙ্গীত ও শরীর চর্চা, স্কুল খোলা-বন্ধ, জাতীয় পতাকা টাঙানো-নামানো, অফিস রুম, ৩টি ক্লাস রুম ও চত্ত্বর পরিস্কার রাখা সহ সব কিছুই করতে হয় মনির হোসেনকে। যার জমিতে বিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছে সেই মনির চৌকিদার ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্কুলটি খুড়িয়ে চলছে। আগে ৫ জন শিক্ষকের জায়গায় ২ জন দিয়ে চলতো। এখন একজন মাত্র শিক্ষককে ৬টি শ্রেণি সামলাতে হয়। একজন দপ্তরিও নেই। ক্লাশ না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসে না।’