নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: কখনও নাম ভাঁড়িয়েছে। কখনও ধর্ম। কখনও পেশা। আর তার নিখুঁত অভিনয়ের ফাঁদে পা দিয়েছিল সাধারণ বাড়ির মেয়ে থেকে শুরু করে নামী হাসপাতালের চিকিৎসক। দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম- সবত্রই প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় ডেরা বেঁধে বিয়ের নাম করে কমপক্ষে শতাধিক মেয়ের কাছ থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা তুলে গা ঢাকা দিয়েছিল বাছাধন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বৃহস্পতিবার দিল্লির পাহাড়গঞ্জের এক আস্তানা থেকে অভিযুক্ত ঠগ ফারহান তাসির খানকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। জেরা করে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে চমকে উঠেছেন দুঁদে পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মার্চ মাসে দিল্লি পুলিশের কাছে ঠগ ফারহানের নামে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের এক মহিলা চিকিৎসক। অভিযোগপত্রে তিনি জানান, এক পাত্র-পাত্রী সংক্রান্ত (ম্যাট্রিমোনিয়াল ) এক সাইটে ওড়িশার কেওনঝড়ের বাসিন্দা ফারহান তাসির খানের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরিচয়ের সময়ে নিজেকে এমবিএ পাশ হিসেবে দাবি করে তাসির জানিয়েছিল, নিজের পায়ে দাঁরাতে ব্যবসা শুরু করেছে। কিছুদিন বাদেই ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ১৫ লক্ষ টাকা ঋণ চায়। কিন্তু ওই টাকা দেওয়ার পরেই আচমকা উধাও হয়ে যায়।’
অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে ভিন্ন-ভিন্ন নামে অ্যাকাউন্ট খুলে নিপুনভাবেই প্রতারণা চালিয়েছে তাসির। মেয়েদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে নিজেকে জাহির করতে গাড়ির জন্য ভিআইপি নম্বর ব্যবহার করত। সে কতটা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তা তুলে ধরার কৌশল হিসেবেই এই পথ বেছে নিয়েছিল। দিল্লি পুলিশের তদন্তকারীরা কলকাতায় গিয়ে তাসিরের সন্ধান পায়। তার পরে তক্কে তক্কে ছিল। ঠগকে লাগাতার অনুসরণ করতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। শেষ পর্যন্ত বাছাধন দিল্লিতে এসে ঘাঁটি গাড়তেই বৃহস্পতিবার পাকড়াও করা হয়।