এই মুহূর্তে




শ্রাবণ মাসে জ্যান্ত কেউটের মাথায় দুধ-জল ঢেলে পুজো!




নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার, বাবার দিন অর্থাৎ শিব ঠাকুরের জন্ম। হিন্দুদের কাছে শ্রাবণ মাসটির আলাদাই প্রাধান্য। রাজ্যের কোণে কোণে থেকে শিব ভক্তরা তারকেশ্বরে বাবার ধামে যান। পায়ে হেঁটে বাবার ধামে গিয়ে ভক্তিভরে শিব পুজো করেন। এছাড়াও যাঁরা তারকেশ্বর যেতে পারেন না তাঁরাও নিজেদের এলাকার নানা শিবমন্দিরে গিয়ে শিবপুজো করেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শ্রাবন মাসের প্রতি সোমবার শিব পুজোয় মাতেন হিন্দুরা। এরপরেই আসবে মনসা পুজো, যিনি মর্ত্যে নাগদেবী নামেও পরিচিত। তবে পূর্ব বর্ধমানের কয়েকটি গ্রামে মনসা পুজোর আগেই জ্যান্ত কেউটে সাপকে পুজো করা হয়? কি বিষয়টি শুনে খুব অবাক লাগছে তাই তো! সাপ মানেই বিষাক্ত, আর সেখানে যদি কেউটে হয় তাহলে তো এক ছোবলেই ছবি, এই বিষয়টাই সবার মাথায় আসে, তাই তো! না ওই গ্রামে এই কেউটের ছোবলকেই দেবী মনসার প্রসাদ বলে মনে করা হয়। চলুন এবার বিষয়টা খোলাসা করা যাক!

সোমবার পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের পলসোনা গ্রামের একটি মন্দিরে এক বিশাল কেউটে সাপকে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হল। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুরোহিত এক হাতে লেজটা ধরে রেখেছেন, তার অন্য হাতে ছোট্ট একটি লাঠি। সেই লাঠিই জড়িয়ে রয়েছে কেউটেটি। যদিও মাঝেমধ্যে ফণা তুলছে বৈকি! কিন্তু পুরোহিতের একেবারেই কোনও ভয়ডর নেই, বরং মন্দিরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আর এক পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে সেই কেউটের মাথায় দুধ, গঙ্গা জল ঢেলে সাপের মাথায় নিজের হাতে সিঁদুর মাখিয়ে দিচ্ছেন। এ ভাবেই জ্যান্ত কেউটেকে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হচ্ছে সেই গ্রামে। তবে এবার নিশ্চই জানতে ইচ্ছে করছে, আসলে বিষয়টা কি, সাপটাকে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হচ্ছে, কিন্তু তার কোনও বিরক্ত নেই, ফোস করেও উঠছে না! ব্যাপারটা কী? আসলে গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, এই গ্রামে কেউটেকে দেবীজ্ঞানে পুজো করাই রীতি। তবে এই কেউটে একটু স্বতন্ত্র।

কারণ একে পূর্ব বর্ধমান জেলার চার-পাঁচটি গ্রাম ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না। গ্রামবাসীদেররা এই বিশেষ ধরনের কেউটেকে ঝঙ্কেশ্বরী বা ঝাঁকলাই নাম দিয়েছেন। আর তার পুজোই হয় আষাঢ় মাসে। তবে গ্রামবাসীরা তাকে সাপ নয় দেবতা জ্ঞানে পুজো করে। উল্লেখ্য, ঝাঁকলাই আদপে তীব্র বিষযুক্ত কেউটে। এর সঙ্গেই যুগের পর যুগ ধরে সহাবস্থান করছেন এই গ্রামের গ্রামবাসীরা। তাঁদের বিশ্বাস, সাক্ষাৎ দেবী মনসাই সাপ রূপে এই গ্রামে বাস করছেন। তিনিই পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের মুশারু, পলসোনা, ছোটপশলা এবং ভাতারের বড়পোশলার গ্রামবাসীদের বিষধরের ছোবল থেকে রক্ষা করে আসছেন। তাই ঝাঁকলাই তাঁদের কাছে ‘জ্যান্ত দেবী’। তাকে ঘিরেই মন্দিরে ভিড় জমেছে গ্রামের মহিলাদের।

প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথিতে ভাতারের বড়পোশলা, শিকোত্তর, মুকুন্দপুর এবং মঙ্গলকোটের ছোটপোশলা, পলসোনা, মুশারু, নিগন মিলে মোট সাতটি গ্রামে ঝাঁকলাইয়ের পুজো হয়। আর এই সাপেদের বংশের গ্রামের পথে-ঘাটে, গৃহস্থ বাড়ির রান্নাঘর, শোওয়ার ঘর, সর্বত্রই অবাধ বিচরণ। তবে ঝাঁকলাই বিষধর হলেও কাউকে কামড়ায় না। কোনও কারণে ছোবল মারলেও মন্দিরের মাটি লেপে দিলেই বিষমুক্ত হয়ে যান সেই মানুষটি। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই সাপই লখিন্দরকে লোহার বাসরঘরে দংশন করে পালিয়ে গিয়েছিল। আর বেহুলা কাজললতা ছুড়ে মারাতে কালনাগিনীর লেজ কেটে যায়। ঝাঁকলাই আসলে ‘কালনাগিনী’। আর এই গ্রামে যে ঝাঁকলাইয়ের দেখা মেলে, তাদেরও লেজ কাটা।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

Durga Puja : অর্গলা স্তোত্র কী? জেনে নিন পাঠ করার ফলাফল

‘চিকিৎসকদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি’, বার্তা মমতার

পশ্চিম মেদিনীপুরে জলবন্দি ৬৪ জন গর্ভবতী মহিলাকে উদ্ধার

রিল বানানোর জন্য হতেই হবে সুন্দরী, ইনস্টাগ্রাম সম্পূর্ণভাবে মুছছে বিউটি-ফিল্টার

‘DVC-র জলে কেন বাংলা ডুববে, আমরা জানতে চাই, কৈফিয়ত চাই’, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব মমতা

‘৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়ে দিয়েছে, এটা Man Made Flood’ বার্তা মমতার

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর