নিজস্ব প্রতিনিধি, পুনে : প্রসব বেদনায় ছটফট করছেন প্রসূতি। চিকিৎসক এলেন। নবজাতকের কান্নার শব্দের মধ্যে দিয়ে নিরাপদে প্রসব হল। চিকিৎসকের মুখে হাসি ফুটল। শুধুমাত্র ভালোভাবে প্রসবের জন্য নয়, কন্যাসন্তান জন্ম হয়েছে যে। প্রসূতির পরিবারের লোকজন বিল মেটাতে গিয়ে অবাক হলেন। এত কম! হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, ডাক্তারবাবু একটা পয়সাও নেননি।
এমন ভাবেই ১১ বছর ধরে নীরবে ‘বেটি বাঁচাও’য়ের জন্য কাজ করে চলেছেন পুনের এক হাসপাতালের চিকিৎসক গণেশ রাখ। এই ১১ বছরে ২৪০০-রও বেশি কন্যাসন্তানকে সফল ভাবে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন চিকিৎসক রাখ। কারওর থেকে কোনও ফিজ নেননি তিনি। শুধু তাই নয়, পুনের হাদাপসরে এই বেসরকারি হাসপাতালে মূলত চিকিৎসক রাখের উদ্যোগে কন্যা জন্মালেই উৎসব পালন হয়। কেক কেটে নবজাতককে স্বাগত জানানো হয়। এখানেই থেমে থাকেন না ডাক্তারবাবু। প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে নিজের খরচে অটোতে চাপিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক গণেশ রাখ বলেন, ‘২০১২ সালে যখন আমি এই হাসপাতালে কাজে যোগ দিই তখন দেখি, কন্যা জন্মালেই পরিবারের লোকজন মুষড়ে পড়তেন। তাঁদের মুখের হাসি মিলিয়ে যেত। দূরে দূরে থাকতেন। তখনই ঠিক করি এই লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে হবে। তাই মেয়ে জন্মালে আমি কোনও টাকা নিই না’। তিনি জানান, সরকারি সমীক্ষা অনুযায়ী গত ১০ বছরে ৬ কোটি কন্যাভ্রুণ নষ্ট করা হয়েছে। এই বিষয়টিকে তিনি ‘হত্যা’ বলে অভিহিত করেন। তবে তাঁদের সমীক্ষা অনুযায়ী পুনেতে কন্যাভ্রুণ হত্যা অনেক কমে এসেছে। যেখানে গণেশ রাখের মতো চিকিৎসক রয়েছেন, তখন তো কন্যাভ্রুণ হত্যা কমবেই।