নিজস্ব প্রতিনিধি, জবলপুর: জীবনযুদ্ধ সকলের এক না হলেও যুদ্ধের একমাত্র লক্ষ্য হল বেঁচে থাকা। যারা বিশেষভাবে সক্ষম, তাদের লড়াই একরকম। কঠিন রোগে আক্রান্তদের লড়াই অন্যরকম। জবলপুরে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে এক রিক্সাচালকের। সে তাঁর বাম হাতে ধরে রয়েছে ছেলেকে। ছেলে বাবার কাঁধে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। আর ডান হাত রিক্সার হাতলে। পথচলতি এক ব্যক্তি সেই মুহূর্তের ছবি মোবাইলে তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো দেখে অনেকেই খোঁজ করেন এই রিক্সা চালকের। বহু মানুষ তাঁর হাতে অর্থ তুলে দিয়েছে রিক্সাতে না চেপেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া জীবনযুদ্ধের এই সৈনিকের নাম রাজেশ। বাড়ি জবলপুরে। তাঁর দুই সন্তান। বাড়িতে থাকে বড়ছেলে। জানা গিয়েছে, ছোট ছেলে জন্ম হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই রাজেশের স্ত্রীর মৃত্যু হয়।স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছোট ছেলেকে নিয়ে চিন্তা ছিল রাজেশের। ছোট ছেলে বেশ দুরন্ত। বাড়িতে রেখে এলে বিপদ ঘটতে পারে, এই ভয়ে প্রতিদিন সকালে ছেলেকে খাইয়ে নিয়ে রিক্সা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন রাকেশ। বাবার কোলে চড়তে চড়তে সে ঘুমিয়ে পড়ে।
সব থেকে সমস্যা হয় বর্ষায়। বৃষ্টিতে ছেলে ভিজলে শরীর খারাপ হবে এই আশঙ্কায় সে রিক্সায় অস্থায়ী একটা আড়াল তৈরি করে। চারিদিক ঢেকে রিক্সার সিটে ছোট ছেলে নিয়ে বসতে হয়। বৃষ্টি পড়া বন্ধ হলে আবার শুরু হয় তার প্যাডেল চালানো। রাজেশ জানিয়েছে, ৩৬৫ দিন তাঁকে রিক্সা নিয়ে বেরতে হয়। এমন বহু মানুষ তাঁর রিক্সায় সওয়ার হয়েছেন, তারা নির্দিষ্ট ভাড়ার থেকে বেশি টাকা হাতু তুলে দিয়েছে।