(২৫ বৈশাখ গুরুদেবের জন্মদিন, তাঁকে ঘিরে কত আড়ম্বর- আয়োজন ছিল। তবু একা হয়েছিলেন কি তিনি? নেহাতই কল্পনা)
‘ ছিঃ ছিঃ ছিঃ, পুরুষে কখনো সোনা পরে.. লজ্জার কথা! ‘ – সকাল থেকেই কানে বাজছে নোবেলজয়ীর। ক্লান্ত রবি (Rabindranath Tagore) নুইয়ে পড়েছেন। অনুশোচনায় নুইয়েছেন আরও। না কি একাকীত্ব? চারিদিকে মানুষজন তবু নিজের মানুষ কই?!
আজ জন্মদিন (Birthday), ২৫ শে বৈশাখ। উপহার জমেছে, আছে আড়ম্বর, আন্তরিকতা কই? এই আন্তরিকতাকেই কী দম্ভের সঙ্গে উপেক্ষা করেছিলেন একদিন। আজ ক্ষমা চাওয়ার উপায় টুকুও নেই।
ঠোঁটের কোণে স্মিত হাসি, চোখের কোণে জল!
কত স্বজন হারিয়েছেন, কত অবহেলা, অপমান। কান্না আসে না আর। বেরিয়ে এল চাপা দীর্ঘশ্বাস।
ক্ষমা করো মৃণালিনী (Mrinalini)। আমার ছুটি। বুঝতে পারিনি। নিজের কথা আজও বাজে কানে। সেই সোনার বোতাম তো শুধু উপহার ছিল না, ছিল অনুভূতিটুকু। যা দিয়ে আমার ভূমিষ্ঠ দিনে সাজাতে চেয়েছিলে রুক্ষ অন্তর। আচ্ছা, পাঞ্জাবির বোতাম কেন? বুকের মাঝখানে রয়ে যাবে বলেই? জানি না, তবু মনে হয়, আজ এতদূরে এসে। হয়তো মুহূর্তটুকু থেকে যেত সোনালী হয়ে।
এত উপহার আগাছা গ্রহণ করেছি হাসিমুখে, আসল টুকুই চিনতে পারলাম না, দেখো ছুটি। কী অবজ্ঞা! যে তির ঘুরে এসে আজ আমায় ছুঁয়ে যায় তার চেয়ে বহু দুরন্ত গতি বিঁধেছিল তোমায়। বুঝতে দাওনি, হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলে সবটুকু। যে উপহার ফুলের পরশ হয়ে থাকত সেই না নেওয়া উপহারই আজ কাঁটার মতো বিঁধে আছে বুকে। ক্ষমা করো। এত আন্তরিকতাহীন আড়ম্বরের মাঝে একা থাকতে ইচ্ছে হয় খুব। জন্মদিনটা আমার একার ছুটি। যে শুভ দিনের ভাগীদার হতে চেয়েছিলে, সেই দিনই আমায় একা করে দেয় স্মৃতি ছুঁড়ে দিয়ে। তবু, ভালবাসি। প্রকাশ করতে চাইনি কোনওদিনই। তুমি বলবে পুরুষত্বের দম্ভ। না হয় মেনে নিলুম।
‘জন্মদিন আসে মৃত্যুদিনের ধারাকে বহন করে’ খুব মনে হয়। ইচ্ছে হলেও একা থাকার উপায় নেই। সেই আশা… , এতো আড়ম্বরের মাঝেও কেউ সামান্য হলেও ভালবাসে…
এ অনুভব শুধু তাকে শোনানো হলো না। কোনও কবিই হয়ত বোঝাতে পারে না, বুঝতে পারে না ভালোবাসাটুকু। শুধু খুঁজে বেড়ায়…
‘ওলো সই, ওলো সই/ আমার ইচ্ছা করে তোদের মতন/ মনের কথা কই’
তবু থাকে চাপা…