নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৮ থেকে ২০২৩। ৫ বছরের সময়সীমা। বদলেছে সময়, বদলেছে ছবিও। খালি বদলায়নি বিরোধী শিবিরের প্রতি আমজনতার অসমর্থন আর তাঁদের কর্মীর অভাব। পাঁচ বছর আগের পঞ্চায়েত ভোটের(Panchayat Election) তুলনায় এ বার দ্বিগুণ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে বিরোধীরা। কিন্তু তারপরেও আগামিকাল তাঁরা তাঁদের যে সব বুথে প্রার্থী আছে সেই সব বুথে এজেন্ট বসাতে পারছে না। অন্তত বাম(Left), কংগ্রেস(INC), বিজেপির(BJP) শিবির সূত্রে সেই খবরই মিলেছে। সম্ভবত বিরোধীরা সন্মিলিত ভাবে যত প্রার্থী দিয়েছে তার অর্ধেকের অর্ধেকের বুথেও তাঁরা এজেন্ট(Booth Agent) বসাতে পারছে না। খুব জোর ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার বুথে বিরোধীদের এজেন্টদের দেখা মিলতে পারে। বাদ বাকি বুথে শুধুই ভোকাট্টা।
আরও পড়ুন ২০০৩ সালে বাম জমানাতেই পঞ্চায়েত ভোটে রক্তে স্নান করেছিল বাংলা
২০১৮-র তুলনায় ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি প্রায় ৫ গুণ বেশি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। কংগ্রেস পেরেছে ৩ গুণ বেশি আসনে প্রার্থী দিতে। বামেরা প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু এই ৩ দল যত প্রার্থী বেশি দিতে পেরেছে সেই গুণে কিন্তু বুথে এজেন্ট বসাতে পারছে না। আর সেটা ভোটের আগের দিন তাঁরা কার্যত অঘোষিত ভাবে স্বীকারও করে নিচ্ছে। তিন দলের নেতারাই একান্ত আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন, যেখানে যেখানে প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে, সেই সব জায়গায় সর্বত্র বুথে এজেন্ট বসানো সম্ভবই নয়। কেননা কর্মী বলের নিদারুণ অভাব। সেই সঙ্গে অভাব আমজনতার সমর্থনও। প্রকাশ্যে অবশ্য বিরোধীরা কেউই এই ‘দুর্বলতা’র কথা বলছে না। কারণ, তাতে দলীয় কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন হাইকোর্টে ধাক্কা শুভেন্দুর, বহাল গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ
নিজেদের মধ্যে একান্ত আলোচনায় এই ৩ দলের নেতারা সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের কাছেও স্বীকার করে নিচ্ছেন যে এ বারের ভোটে প্রার্থী দেওয়াটাই ছিল তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ তাঁরা উৎরে গিয়েছেন। কিন্তু যে সব বুথে তাঁরা প্রার্থী দিয়েছেন সেই সব বুথে তাঁরা লোক পাচ্ছেন না এজেন্ট হিসাবে বসার জন্য। কেন না তাঁদের ওত কর্মীই নেই যে শাসকের চোখে চোখে রেখে কথা বলবেন। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। পাশাপাশি তাঁরা এটাও মানছেন যে, ভোটের দিন পরিস্থিতি অনেকটাই নির্ভর করে স্থানীয় মানুষের মুডের ওপর। তবে নানা কারণেই সব বুথে এজেন্ট বসানোর বাস্তব পরিস্থিতি নেই। আসলে বাম হোক কী কংগ্রেস কিবা বিজেপি, এই ৩ দলই এখন Facebook-কেন্দ্রিক। বুথে Face নেই। পাশাপাশি তাঁরা এটাও মানছেন যে, গ্রামের সব পরিবারই রাজ্য সরকারের কোনও না কোনও প্রকল্পের সুযোগ পেয়েছে। হয়তো সেই সব বাড়ি আগে বাম বা বিজেপি বা কংগ্রেসের সমর্থক ছিল। কিন্তু এখন তাঁরা বুথে বসা তো দূরে আগের সমর্থক দলকে ভোটটাই দিতে চাইছেন না।