নিজস্ব প্রতিনিধি: ক্রিকেট ব্যাট হাতে একের পর এক ম্যাচে অর্ধ্বশতরান পূর্ণ করেছেন শচীন তেন্ডুলকর। সোমবার সেই শচীনই আবার হাফ সেঞ্চুরি করলেন। তবে ব্যাট হাতে নয়, শচীন আজ পদাপর্ণ করলেন ৫০তম বছরে।ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শচীনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর ঢল নেমেছে। এই তালিকায় শুধু ক্রিকেটাররাই নন, রাজনীতিবিদ থেকে শচীনের ভক্ত সবাই রয়েছেন।
১৯৭৩ সাল বাণিজ্য নগরী মুম্বই-য়ে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শচীন তেন্ডুলকর। বাবা রমেশ তেন্ডুলকর ছিলেন অধ্যাপক। প্রয়াত কিংবদন্তী সংঙ্গীত শিল্পী শচীন দেব বর্মনের নাম অনুসরণ করেই ছেলের নাম রেখেছিলেন শচীন।
একদিন আচমকাই তাঁর বোন শচীনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন একটি ক্রিকেট ব্যাট। বেশ সেই থেকেই হয়তো ক্রিকেটের বিস্ময় বালক পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁর পছন্দের সেরা উপহারটি।
এরপর দাদার হাত ধরে প্রয়াত দ্রোণাচার্য কোচ রামাকান্ত আচরেকরের হাত ধরে উঠে আসা সেদিনের সেই ছেলেটি একদিন ক্রিকেট দুনিয়াকে শাসন করেছিল তাতো সকলেই জানা এবং দেখা। একটা বা দুটো বছর নয়, দীর্ঘ ২৪ বছর তিনি ব্যাট হাতে শাসন করেছেন ক্রিকেটের ২২ গজকে। ৬৬৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে রান করেছেন ৩৪, ৩৫৭ রান। যা এক কথায় নজিরবিহীন। বিশ্ব ক্রিকেটে এখনও তাঁর করা ১০০টি সেঞ্চুরির রেকর্ড রয়েছে অক্ষত।
সোমবার সেই শচীনের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁকে এবং প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার ব্রায়ান লারাকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। সিডনি ক্রিকেট মাঠের যে গেট প্রয়াত ক্রিকেটার ডন ব্র্যাডম্যানের নামাঙ্কিত সেই গেট দিয়েই তাঁদের মাঠে প্রবেশ করিয়ে গার্ড অফ অনার দেওয়া হবে। শচীন তেন্ডুলকরের ৫০ বছর জন্মদিন উপলক্ষ্যে এবং ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার ব্রায়ান লারা ২৭৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বলেই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের এমন সিদ্ধান্ত। সোশ্যাল মাধ্যমে শচীনকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের পক্ষ থেকেও।
শচীন ক্রিকেট ব্যাটকে তুলে রেখেছেন আজ থেকে ১০ বছর। ২০১৩ সালের নভেম্বর নিজেদের ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্টে মাঠে নেমেছিলেন শচীন রমেশ তেন্ডুলকর। তারপর বাকিটা তো ইতিহাস। নিজের ৫০তম জন্মদিনের দিনেই শচীন এশিয়া কাপের ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান পূর্ণ করে গড়েছিলেন ১০০টি সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড।
শচীন মানেই শুধু রেকর্ড, রেকর্ড আর রেকর্ড। কত স্মৃতি, কত ইতিহাস যা শেষ হওয়ার নয়। তাই তো জীবনের ৫০তম জন্মদিনের আগের দিন শচীন বলেছিলেন, আমি ভাবতেই পারছি না আমার ৫০ বছর বয়স হয়ে গেল।
শচীনের স্মৃতি চারণা করতে গিয়ে জাতীয় দলে তাঁর অনেক সতীর্থই আজ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বীরেন্দ্র সেওয়াগ। আছেন প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান রিচি রিচার্ডসনও। সবার মুখেই একটাই কথা, শচীন ইস গ্রেট। ওঁর মতো ক্রিকেটার ভবিষ্যৎতে আর এই পৃথিবীতে কেউ আসবে কি না জানা নেই। তবে আমরা ধন্য আমরা ওঁর সঙ্গে খেলেছি, এবং ওঁর খেলা দেখেছি।
সব শেষে সবারই একটাই কথা ‘হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ শচীন’