নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গিয়েছে। অথচ এখনও পুজোর নতুন জামা হয়নি। অগত্যা শাকের পসার সাজিয়ে রাস্তায় বসে পড়ল এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। শাক বিক্রি করেই পুজোর আগে ঠিক একটা জামা কিনে নিতে পারবে বলেই দাবি করল ধূপগুড়ি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজদীপ তরফদার।
পরিবারে নিত্যদিনের অভাব। বাবা সঞ্জয় তরফদার ফুটপাতে চা বিক্রি করেন। তাতে যা আয় হয়, তা দিয়ে দু’বেলা দুই ছেলে, স্ত্রী ও মায়ের মুখে দু’মুঠো খাবার জোগানো যায়। এমন পরিস্থিতিতে নতুন জামা মানে তাদের কাছে বিলাসিতা। কিন্তু পুজোয় নতুন জামা কে না চায়! বাবা জামা কিনে দিতে পারেনি, তাতে কোনও ক্ষোভ নেই বছর দশেকের রাজদীপের। বরং বাড়ির অভাব বুঝে নিজেই রোজগারের জন্য বেরিয়ে পড়েছে। রাজদীপ বলল, ‘দাদা সিক্সে পড়ে, ও বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ করে। আমি বাবার দোকানের সামনেই শাক বিক্রি করছি। দু’জনের যা আয় হবে, তা দিয়েই বাড়ির সবার জন্য জামাকাপড় কিনব।’
কিন্তু এত অল্প বয়সে কেন রোজগার করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে দুই ভাইকে? উত্তরে সন্দীপ-রাজদীপের ঠাকুমা রেখা তরফদার বললেন, ‘পড়াশোনায় ওদের মাথা ভাল। কিন্তু এখন স্কুল বন্ধ। আগে স্কুল থেকেই পুজোর জামা পেত। এবছর আর সেই সুযোগ নেই। এদিকে ওদের বাবাও নতুন জামা কিনে দিতে পারেনি। তাই ছোট নাতি শাক বিক্রি করছে। বড় নাতি ওর বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে যাচ্ছে। এছাড়া কোনও উপায়ও নেই।’