নিজস্ব প্রতিনিধি: সুন্দরবনে(Sundarban) বাঘের হামলায় মৎস্যজীবীর(Fisherman) প্রাণহানীর ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই সেখানে ৬-৭জন মানুষ প্রাণ হারান দক্ষিণ রায়ের হামলার জেরে। কারও কারও দেহ তো খুঁজেও পাওয়া যায় না। লকডাউনের জেরে সুন্দরবনে গত দুই বছরে বৈধ ও অবৈধ ভাবে মাছ, কাঁকড়া ও মীন ধরতে যাওয়ার মানুষের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাঘের(Tiger) হাতে প্রাণহানীর ঘটনাও। রবিবার সকালেও বাঘের হামলায় সেখানে প্রাণ গিয়েছে এক মৎস্যজীবীর। মৃত মৎস্যজীবীর নাম সন্ন্যাসী মণ্ডল(৪৫)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং মহকুমার গোসাবা(Gosaba) ব্লকের কুমিরমারি গ্রামে। রবিবার ভোরে ঝিল্লার জঙ্গলের একটি খাঁড়িতে বাঘের হামলায় তাঁর প্রাণ গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে কুমিরমারি গ্রামের বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী ঝিল্লার জঙ্গলে একটি নৌকা নিয়ে গিয়েছিলেন মাছ ধরার উদ্দেশ্যে। সন্ন্যাসী মণ্ডল ছাড়াও সেই নৌকায় ছিলেন নিরঞ্জন জোতদার, বাবু মণ্ডল, ভবতোষ মণ্ডল নামে আরও তিনজন মৎস্যজীবী। শনিবার মাছ-কাঁকড়া ধরে একটি খাঁড়িতে নৌকা ভিড়িয়েছিলেন তাঁরা। রবিবার ভোরের আলো ফুটতেই খঁড়িতে কাঁকড়া ধরার তোড়জোড় করতে থাকেন তাঁরা। সেই সময়েই খাঁড়ির পাশে থাকা ঝোপে ঘাপটি মেরে থাকা বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে সন্ন্যাসীর ঘাড়ের ওপর। তাঁকে টানতে টানতে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘটি। কিন্তু ভবতোষ, নিরঞ্জনরা লাঠি আর নৌকার বৈঠা নিয়ে বাঘের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সঙ্গীকে উদ্ধারের জন্য। দীর্ঘক্ষণ চলে বাঘে মানুষের তুমুল লড়াই। শেষে শিকার ফেলেই পালিয়ে যায় বাঘ।
গুরুতর জখম অবস্থায় আহত সন্ন্যাসীকে নৌকায় তুলে দ্রুত গ্রামে ফেরার জন্য নৌকায় চালান বাকিরা। কিন্তু প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে মাঝনদীতে নৌকার মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সন্ন্যাসী। ঘটনার জেরে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের অধিকর্তা তাপস দাস জানিয়েছেন, ‘ঘটনার খবর পেয়েছি। বাঘের আক্রমণে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ঠিক নির্দিষ্ট কোন জায়গায় হয়েছে সেটা এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। তবে যে বা যাঁরা কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন তাঁদের বৈধ কোন কাগজপত্র ছিল না বলেই আমরা জানতে পেরেছি। এমনিতেই এখন মাছ কাঁকড়া ধরার নিষেধ রয়েছে। আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’