-273ºc,
Friday, 2nd June, 2023 8:49 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজে হাতুড়ে চিকিৎসক(Quack Doctor)। কিন্তু চেয়েছিলেন ছেলে দাঁতের ডাক্তার(Dentist) হোক। কিন্তু সেই ছেলেকে ডাক্তারি পড়াতে গিয়েই প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা খুইয়ে বসে রইলেন। পরিস্থিতি যা তাতে তাঁর ছেলের পক্ষে আর ডাকাত্র হয়ে ওঠা সম্ভবই নয়। যিনি এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাঁর নাম স্বদেশরঞ্জন মণ্ডল। বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার পাঁশকুড়া(Panshkura) থানার আড়িশান্ডা গ্রামে। সরকারি ভাবে তিনি গ্রামের একজন কোয়াক ডাক্তার। তাঁর ছেলে National Eligibility cum Entrance Test বা NEET পরীক্ষায় বসলেও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তাই ছেলেকে ম্যানেজমেন্ট কোটায় Dental College থেকে বিডিএস পড়ানোর জন্য খোঁজখবর শুরু করেন স্বদেশবাবু। আর সেখানেই তিনি প্রতারণার শিকার হন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এনিয়ে তিনি তমলুক থানায় এফআইআর করেছেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার সিদ্ধার্থ দে জানিয়েছেন, মোট ১৫ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই লেনদেনের তথ্য ব্যাঙ্ক থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপর অভিযুক্তদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আরও পড়ুন বাংলা থেকে বেমালুম গায়েব ১,২৬৬টি রাস্তা, অবাক নবান্ন
ঠিক কী হয়েছিল? জানা গিয়েছে, স্বদেশরঞ্জনবাবু ছেলেকে ম্যানেজমেন্ট কোটায় ডেন্টাল কলেজে ভর্তি নিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করেন। তাঁর চেম্বারের এক কর্মী এই জন্য তমলুক থানার বল্লুকহাটের একজনের খোঁজ দেন। ওই বাসিন্দা ডেন্টাল কলেজে ম্যানেজমেন্ট কোটায় ভর্তি করানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর সিট বুকিংয়ের জন্য ২০২১ সালে ৪ নভেম্বর ৩ লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু, ওই কলেজে স্বদেশবাবু তাঁর ছেলেকে ভর্তি করতে পারেননি। তাই তাঁর দেওয়া ৩ লক্ষ টাকা তিনি ফেরত চান ওই প্রতারকের কাছ থেকে। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা ওই প্রতারক তাঁকে ভিন রাজ্যের একটি কলেজে ভর্তির গ্যারান্টি দেয়। তার জন্য আবার ১০ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে জানায়। সেইমতো গত বছর মে মাসে দু’দফায় ১০ লক্ষ টাকা তুলে দেন স্বদেশরঞ্জনবাবু। গত বছর জুলাই মাসে ভিন রাজ্যের ওই ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য স্বদেশরঞ্জনবাবু ও তাঁর ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে বলে দাবি করে তাঁর কাছ থেকে আরও ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। ক্লাস করার আগে ওই টাকা দিতে হবে বলে জানানোর পর সেই টাকাও দেন স্বদেশবাবু। তারপর খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন, ভিন রাজ্যের কলেজে তাঁর ছেলে ভর্তি হয়নি। তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
আরও পড়ুন বাংলার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় BJP’র পতাকা লাগানোরও কেউ নেই
এরপরই টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালান। কিন্তু, টাকা ফেরত পেতে ব্যর্থ হওয়ায় শেষমেশ থানার দ্বারস্থ হন। স্বদেশরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, ‘আমি দাঁতের চিকিৎসা করি। আমার পরিচিত একজন বল্লুকহাটের এক বাসিন্দার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর ম্যানেজমেন্ট কোটায় ভর্তির নাম করে ওই ব্যক্তি টাকা চাওয়া শুরু করে। নিজেকে ডেন্টাল কলেজের অধ্যাপক দাবি করায় আমার বিশ্বাস হয়েছিল। নিজের সঞ্চিত টাকা ছাড়াও অনেকের কাছ থেকে ধার করে ১৫ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ওই ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছি। এখন আর ছেলেকে ডাক্তারি পড়াতে পারব না। জীবনের শেষ সম্বলটাই চলে গিয়েছে।’