এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

পাঁচশোরও বেশি ভোটে হারলেন অশোক! পরাস্ত নান্টু-শঙ্করও

নিজস্ব প্রতিনিধি: শিলিগুড়ি, এক কথায় উত্তরবঙ্গের রাজধানী। সেখানকার সব থেকে বড় শহর। কেউ কেউ একে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার বলেও চিহ্নিত করে থাকেন। হ্যাঁ এই শহরকে অনেকে চেনেন অশোক ভট্টাচার্যের শহর বলেই। দীর্ঘ ৫ দফার বিধায়ক তিনি এই শিলিগুড়ি থেকেই। হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রীও। বামেরা ক্ষমতা থেকে সরে গেলেও কংগ্রেসকে পাশে নিয়ে অশোকবাবু শিলিগুড়ি পুরনিগম চালিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যের সামনে ‘শিলিগুড়ি মডেল’ তুলে ধরেছেন। তারপরেও উনিশের লোকসভা ভোট ও একুশের বিধানসভা ভোট দেখিয়েছে শিলিগুড়ির জনতা তৃণমূলকে নিয়ে তাঁদের মনোভাব না বদলালেও তাঁরা এবার বাম-কংগ্রেসের রাজত্বপাটের অবসান চান। আর তৃণমূলের বিরোধীতায় তাঁদের পছন্দ বিজেপি। তাই অনেকেই ভেবেছিলেন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৬টি ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকা বিজেপিই বোধহয় এবার শিলিগুড়ির দখল নেবে। কিন্তু এদিনের ফলাফল বলে দিচ্ছে, বাম হোক কী কংগ্রেস, অশোক ভট্টাচার্য হোক কী শঙ্কর ঘোষ, শিলিগুড়ি আর কাউকেই চাইছে না। তার পছন্দ এখন ‘লক্ষ্মী ভাণ্ডার’-এর তৃণমূল। তাই শিলিগুড়ি পুরনির্বাচনে গৌতম দেব জিতলেন ৩ হাজারেরও বেশি ভোটে আর অশোক ভট্টাচার্য হারলেন ৫১০ ভোটে। হারলেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সহ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নান্টু পালও।

অশোক ভট্টাচার্য কেন হারলেন? এই প্রশ্নের জবাবে অনেকে বলছেন তাঁর ঔদ্ধত্য এই ফলের কারনে। সঙ্গে বাম নেতাদের কংগ্রেসকে ঘিরে থাকা নেতিবাচক মনোভাব। কিন্তু এসবের থেকেও যেটা অশোক ভট্টাচার্যের পরাজয়ের কারণ হিসাবে উঠে আসছে তা হল মানুষের পরিবর্তনমুখী মানসিকতা। এবারে যে চারটি পুরনিগমে ভোট হয়েছে তার মধ্যে সব থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে শিলিগুড়িতে। তাই এই শহরে বিজেপির কী ফল হয়, বাম-কংগ্রেসের কী হয়, তা দেখার জন্য সবাই উদগ্রীব হয়ে বসে ছিলেন। কিন্তু শিলিগুড়ি দেখিয়ে দিল, আর বাম-কংগ্রেস বা বিজেপি নয়, তাঁদের এখন চাই তৃণমূলকেই। কারন অবশ্যই উন্নয়ন। ২০১১ সালের পরিবর্তনের পরে রাজ্যের প্রায় সব পুরসভাতেই ক্ষমতা গিয়েছে তৃণমূলের হাতে। আর তার জেরে রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের হাত ধরে ওই সব পুরসভায় শুধু যে অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে তাই নয়, শহরগুলির উন্নয়নে নজর দিয়েছে সেখানকার পুরবোর্ড সহ রাজ্য সরকারও। শহরকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি শহরের আমজনতার কাছে পুরপরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ নিপুণ ভাবে করে গিয়েছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। সেই জায়গাতেই ঢাঁহা ফেল অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিগত পুরবোর্ড। এই জায়গা থেকেই শিলিগুড়িবাসী পরিবর্তনের সপক্ষে, উন্নয়ন চেয়ে ভোট দিয়েছেন তৃণমূলকে। অশোক ভট্টাচার্য দলের কথা শুনেছেন, কিন্তু আমজনতা কী চাইছেন সেটাই আর বুঝে উঠতে পারেননি। দেওয়াল লিখন পড়ে উঠতে পারেননি। ভেবেছিলেন শিলিগুড়ি চিরাচরিত ভাবে বামদুর্গ, তৃণমূল বিরোধীতার দুর্গ। কিন্তু সেটাই যে পাল্টে যেতে পারে সেটাই ভেবে উঠতে পারেননি।

বিজেপি কেন ধাক্কা খেল? শিলিগুড়িতে বিজেপির সংগঠন বা ভোট ব্যাঙ্ক কিছুই ছিল না। মোদি হাওয়ায় ভর দিয়ে গোর্খাদের চোখে, রাজবংশীদের চোখে, উত্তরবঙ্গবাসীদের চোখে ভুয়ো স্বপ্ন দেখিয়ে ভোট বাগিয়েছে। যারা বাম জমানার ৩৪ বছরে বাম ভোটার ছিলেন, তাঁরাই বাংলা থেকে মমতাকে উৎখাত করতে চেয়ে বিজেপিকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এদের অনেকেই ভেবেছিলেন মোদি হাওয়ায় ডুববেন মমতা, আর উত্তরবঙ্গ হবে আলাদা রাজ্য। কেউ ভেবেছিলেন পাহাড়ে আলাদা রাজ্য হবে কেউ বা ভেবেছিলেন কোচ রাজবংশী রাজত্ব আবারও ফিরবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। মানুষ বুঝতে পেরেছে বিজেপি ভোট নেওয়া ছাড়া আর কিছুই করবে না। উত্তরবঙ্গকে ভেঙে টুকড়ো টুকরো করতে চাওয়া বিজেপিকে তাই তীব্র ভাবে প্রত্যাখান করেছে শিলিগুড়ি। একুশের ভোটে বিজেপির হারের পর শিলিগুড়িবাসীর কাছে এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, এবারেও তৃণমূল শিলিগুড়ির পুরবোর্ডে ক্ষমতায় না এলে শহরের সামগ্রিক উন্নয়ন ধাক্কা খাবে। কেননা রাজ্যের ক্ষমতায় থাকার সুবাদে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড যেটা পারবে সেটা পারবে না বাম-কংগ্রেস বা বিজেপি। আর এই বুঝে যাওয়া আর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাই এবার তৃণমূলকে এগিয়ে দিয়েছে, বিজেপিকে যোজন কদম দূরে ফেলে দিয়েছে। জনতার এই মনোভাব সামান্য হলেও আঁচ করতে পারেননি বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী তথা বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বুঝতে পারেননি তৃণমূলের দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর তথা বিজেপিতে চলে যাওয়া নান্টু ঘোষ। দুইজনই বুঝতে পারেননি শিলিগুড়ি বিজেপিকে চাইছে না।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন জানিয়ে দিয়েছেন, শিলিগুড়িতে পরবর্তী মেয়র হতে চলেছেন গৌতম দেব তেমনি হারের পরে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অশোকবাবুও। জানিয়েছেন, ‘একটা বিপর্যয় হয়েছে। আমাদের যে ভোট বিজেপি-তে গিয়েছিল, সেই ভোট আমাদের কাছে ফেরত আসার বদলে তৃণমূলের বাক্সে ঢুকেছে। আমাদের পলিটিক্যাল রিজেকশন হয়েছে। তবে কমিউনিস্ট পার্টি করি, হতাশায় ডুবে গিয়ে, ঘরে বসে গেলে হবে না। হারের সমস্ত কারণ পর্যালোচনা করা হবে। এটা রাজনৈতিক ভাবে আমার বিপর্যয়। ব্যক্তিগত বিপর্যয় ঘটেছিল কিছু দিন আগে। তবে ভোটে তো হার-জিৎ থাকবেই। মেনে নিতে হবে।’ আর শিলিগুড়িতে বাম শিবিরের এহেন বিপর্যয়ের পরে কংগ্রেস নেতা শঙ্কর মালাকার জানিয়েছেন, সিপিএম যদি তাঁদের দলের সঙ্গে জোট করত, তা হলে শিলিগুড়িতে বোর্ড গড়তেন তাঁরাই।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

আবারও বড়োসড়ো সাফল্য শান্তিপুর থানার পুলিশের, দোকান থেকে চুরি যাওয়া টাকা সহ ধৃত অপরাধী

উলুবেড়িয়াতে মর্নিং ওয়াক করতে বেরিয়ে বিএসএফ জওয়ানের শ্লীলতাহানির শিকার এক মহিলা

প্রেমের টানে প্রথম বিয়ে তালাক দিয়ে প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধর্ণা প্রেমিকার

বর্ধমানের রসুলপুরে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী গাড়ি চালক

শান্তিপূর্ণ ভোটের আবেদন জানিয়ে পথে পথে প্রচার স্বপন দত্ত বাউলের

সীমান্তে বাংলাদেশি টাকা সহ বিএসএফের হাতে ধৃত সিপিএম নেতা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর