এই মুহূর্তে




মেজিয়ার শিকল বাঁধা দুর্গা পুজো পান আড়াইশো বছর ধরে

Courtesy - Google




নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঁকুড়া জেলার(Bankura District) সদর মহকুমার মধ্যে থাকা একটি ব্লক হল মেজিয়া(Mejia)। সেই মেজিয়ার বুকেই রয়েছে আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে পুজো পান ক্ষ্যেপি মা। কেউ কেউ আবাত তাঁকে চেনেন, ‘শিকল বাঁধা দুর্গা’ বলেও। কেন তিনি শেকল বাঁধা? কেননা মা নাকি বড্ড চঞ্চলা। কেবলই পালিয়ে পালিয়ে বেড়ান। তার সেই দুরন্তপনা ঠেকাতেই এক সময়ে শিকল বাঁধা হয়েছিল। আজও চলছে সেই পরম্পরা। কয়েক যুগ কেটে গেলেও আজও একই ভাবেই শিকলে বাঁধা পড়েন মা দুর্গা। পুজোর দিনগুলি যাতে ক্ষ্যাপা মা(Khapa Maa) এদিক ওদিক পালিয়ে যেতে না পারেন, তার জন্য শিকলে বেঁধে রাখা হয় তাঁকে। এই বিশ্বাসে ভর করেই এই প্রথা ধরে রেখেছেন মেজিয়ার পাল পরিবার(Pal Family)। পরম্পরায় একই ভাবে রীতি মেনে পুজো(Durga Puja) হয়ে আসছে আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে। এলাকায় এই পুজো পরিচিত ‘শিকল বাঁধা দুর্গা’ নামেই।

মেজিয়ার পাল পরিবারের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন হুগলি জেলার বাসিন্দা। কারও মতে তাঁরা ছিলেন চন্দননগরের বাসিন্দা। আবার কারও মতে তাঁরা ছিলেন সপ্তগ্রামের বাসিন্দা। মগ আর আরাকানদের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতে পালেদের পূর্বপুরুষরা নাকি মেজিয়ায় চলে আসেন। এখানেই তাঁরা নিজেদের জমিদারি গড়ে তোলেন। গালার ব্যবসা তাঁদের সুদিন এনে দিয়েছিল। সেই ব্যবসায় উন্নতির মুখ দেখেই নাকি গোবিন্দ পাল শুরু করেন দুর্গাপুজো। বাড়িতেই বানানো হয় দুর্গা মন্দির। একইসঙ্গে বানানো হয়েছিল নহবতখানা। পুজোর কদিন সেখানে বাজত সানাই। মন্দিরের ওপর তালায় ও নিচে বেশ কয়েকটি ঘর বানানো হয়েছিল। পুজোর সময় সেগুলি ব্যবহার করা হত। চুন সুড়কির তৈরি ওই প্রাসাদ আজ প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। তবে এখনও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সেই নহবতখানা।

পালেরা সুবর্ণ বণিক সম্প্রদায়ের। বহু আগে সেই পরিবারের পূর্বপুরুষরা দামোদর নদ দিয়ে নৌকা পথে বাণিজ্য করতে আসতেন আজকের রানিগঞ্জ, মেজিয়া এলাকায়। পরিবারের আর্থিক উপার্জন একটা সময়ে বেশ ভালোই ছিল। ছিল বেশ কিছু দেবোত্তর সম্পত্তিও। আর্থিক স্বচ্ছলতার কারণে তখন পুজো হত বেশ ধুমধাম করেই। এখন আর সেই আড়ম্বর নেই। তবে পুজোর পরম্পরা ধরে রেখেছেন পরিবারের সদস্যরা। পুরানো রীতি রেওয়াজ মেনে আজও পাল পরিবারের ঠাকুর দালানে প্রতি বছর উমার আরাধনা হয়। পূর্বপুরুষদের দেখানো আচার নিয়ম মেনে পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। আত্মীয়, পরিজন, বন্ধুবান্ধব মিলে উৎসবে মেতে ওঠেন প্রত্যেকে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুজোর দিনগুলি আনন্দে মেতে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। পাল পরিবারের বিশ্বাস, মা দুর্গা সারা বছরই মন্দির চত্বরে খেলে বেরান। মায়ের দুরন্তপনা আটকাতেই পুজোর দিনগুলিতে শিকল বেঁধে রাখতেন পূর্বপুরুষেরা।

সেই রীতি মেনে আজও মন্দিরের দেওয়ালের আংটায় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় মায়ের আসনের কাঠের পাটাতনটি। এই পুজো এবছর ২৬৬ বছরে পা রাখছে। এই পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিজ্ঞানের যুগে অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইবেন না, তবে পরিবারের সদস্যরা অনেকেই পুজোর সময় অষ্টমীতে পুজো চলাকালীন হঠাৎ করেই চঞ্চল হয়ে ওঠার ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন। সেই সব পুজোর মুহুর্তে মায়ের বেদী ভয়ংকর ভাবে নড়তে শুরু করে। সবাই মিলে ধরে তাঁকে তখন শান্ত করতে হয়। সেই কারণেই মায়ের আসনের পাটাতন শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় দেওয়ালের একটি আংটার সঙ্গে। এখানে সেই অর্থে কোনওদিনই পশুবলি হয়নি। মাসকলাই উৎসর্গ করা হয় মাকে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দশমীতে ইছামতীর তীরে জমজমাট এক দিনের বউ মেলা, তবে নিষিদ্ধ পুরুষ ক্রেতা

ফরিদপুরে একই মণ্ডপে ২৫১ দুর্গা প্রতিমা দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়

পুজো শেষে দুপুরে জমিয়ে খান ওল-চিংড়ি: সহজ রেসিপিতে রসনা তৃপ্তি করুন ঘরেই

মুম্বইতে দুর্গার বিদায় পর্বে জমিয়ে সিঁদুর খেললেন রানি-কাজলরা

৩০০ বছর ধরে সিংহবাহিনী দেবী রূপে পুজিতা হয়ে আসছেন এই রাজবাড়িতে

পান্তা ভাত-কচু শাক খেয়ে কৈলাসে পাড়ি দেন এই বনেদি বাড়ির উমা

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর