নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি মাসেই ২ দিনের বঙ্গ সফরে আসছেন অমিত শাহ(Amit Shah)। আর তার জেরেই বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP) নেতৃত্ব। কেননা রাজ্যে দলের হাল খুবই খারাপ। সেই সঙ্গে বার বার মিথ্যে রিপোর্ট জমা দিয়ে খোয়া গিয়েছে তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতাও। খোদ দলের কেন্দ্রীয় নেতারাই আর বিশ্বাস করেন না বাংলার বিজেপি নেতাদের। এই অবস্থায় শাহের ধমক খাওয়ার হার থেকে বাঁচার জন্য বঙ্গ বিজেপির নেতারা আবারও জনসংযোগের কর্মসূচীকেই বেছে নিলেন। আবারও তাঁরা শুরু করতে চলেছেন ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযান’(Booth Sashaktikaran Abhiyan)। সেই অভিযানে আবার বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের হিন্দিভাষী এলাকাগুলিতে।
আরও পড়ুন ৩ হাজার কোটি টাকায় ৫ জেলায় চলছে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ
বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিত শাহের বাংলায় আগমনের ঠিক আগের দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল বাংলার বুকে শুরু হচ্ছে পদ্মশিবিরের বুথ সশক্তিকরণ অভিযান। চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। অর্থাৎ অমিত শাহ যেদিন দিল্লি ফিরবেন ঠিক তার পরের দিনই ইতি পড়বে বঙ্গ বিজেপির এই বিশেষ অভিযান। যা দেখে অনেকেই বলছেন, সবটাই হচ্ছে অমিত শাহের সামনে এটা তুলে ধরতে যে বঙ্গ বিজেপির নেতা থেকে কর্মীর সংখ্যা অগুণতি। তাঁরা প্রত্যেকেই কর্মঠ ও দলের জন্য জান লড়িয়ে লড়াই করছেন এবং দলে দলে মানুষ বিজেপিকে আঁকড়ে ধরছেন। আদতে সবটাই চোখ ধোয়া নীতি ভিন্ন আর কিছুই নয়। সবটাই ভাঁওতাবাজির নয়া নিদর্শন। এতদিন বিজেপি বাংলা ও দেশের মানুষকে ভাঁওতা দিয়ে এসেছে এবার বিজেপির নেতারাই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের ভাঁওতা দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন মমতার পথেই মোদি সরকার, নজরে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বুথে বুথে কর্মী জোগাড় করতে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। গত ১২ থেকে ২৬ মার্চ ১৫দিন ধরে রাজ্যব্যাপী চলেছিল বুথ সশক্তিকরণ অভিযান। তবে আখেরে এই কর্মসূচি গেরুয়া পার্টির সাংগঠনিক বিস্তারে আদৌ কতটা সাহায্য করেছে, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই সংশয় ছিল। কেননা, ২৬ মার্চ এক বৈঠকে কর্মসূচির সাফল্য নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন শীর্ষ নেতারা। সেখানে রাজ্য নেতারা পসিংখ্যান দিয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ বুথে বিজেপির প্রতিনিধিত্বের দাবি করেন। যদিও তাতে ‘জল মেশানো হয়েছে’ বলে দলেরই পর্যবেক্ষক দাবি করে বসেন। কার্যত সেটা বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কাছে বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে। সেই অস্বস্তি কাটিয়ে তুলতে ও শাহি নজরে Good Boy হয়ে থাকতে তাই ১৩ এপ্রিল থেকে আবারও বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে নামছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। সেই অভিযানে আবার বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের হিন্দিভাষী এলাকাগুলিতে।
আরও পড়ুন কেষ্টগড়ে অমিতের সভা, বিন্দুমাত্র বিচলিত নয় তৃণমূল
সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার সংখ্যালঘু প্রভাবিত এলাকায় পদ্মশিবিরের পক্ষে কোনও নির্বাচনেই ভালো ফল করা সম্ভবই নয়। এ কথা স্পষ্ট বুঝে গিয়েছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। তাই অন্য উপায় না দেখে এবার হিন্দিভাষী এলাকাগুলিকেই ‘টার্গেট’ করেছেন তাঁরা। যদি সেখানে কিছুটা ভাল ফল করে দলের মান বাঁচানো যায়। দলের অন্দরের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোটের(Panchayat Election) পরে কার্যত রাজ্যজুড়ে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ধস নামতে চলেছে। এই অবস্থায় ২০২৪’র লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের মান বাঁচানোর জন্য হিন্দিভাষীদের কাছে টানতে মাঠে নামছে বাংলার পদ্মশিবির। ইতিমধ্যেই বাংলায় খানআষ্টেক হিন্দিভাষী প্রধান এলাকা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সেগুলি হল আসানসোল, পাণ্ডবেশ্বর, হাওড়া, রিষড়া, বড়বাজার, বারাকপুর, জগদ্দল এবং শ্যামপুকুর। এইসব এলাকায় বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক হাল কিছুটা হলেও রয়েছে। আপাতত এই আটটি এলাকা নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও ক্রমশ অন্য হিন্দিভাষী এলাকা নিয়েও চর্চা শুরু হবে। যদিও দলের একাংশের দাবি, এলাকাগুলির প্রায় প্রতিটিতেই ৫০ শতাংশেরও বেশি হিন্দু ভোট বিজেপির পক্ষে রয়েছে। ফলে চিন্তার কোনও কারণ নেই।