নিজস্ব প্রতিনিধি: বাড়িটা ভাড়া নেওয়া। কিন্তু ঠিক কতদিনের তা কেউ জোর গলায় হলফ করে বলতে পারে না। কিন্তু এটা ঘটনা এই বাড়ি থেকেই বাংলার বুকে পথ চলা শুরু করেছিল বিজেপি। এই বাড়ি থাকাকালীন সময়েই বাংলায় ঐতিহাসিক সাফল্য পেয়েছে বিজেপি(Bengal BJP)। ১৮জন সাংসদ ২০১৯ সালের ভোটে। তাই এই বাড়ি অনেক বিজেপি নেতার কাছেই খুব ‘পয়া’। এমনকি একথাও শোনা যায় এই বাড়ি ছেড়ে দল একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মন দিয়ে বসেছিল দক্ষিণ পশ্চিম কলকাতার(Kolkata) হেস্টিংস(Hastings) মোড়ের কাছে থাকা ২ নম্বর সেন্ট জর্জেস গেট রোডের ‘অগ্রবাল হাউস’(Agarwal House)কে। আর তার জেরেই জয়ের সব উপকরণ হাতের কাছে থেকেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গো হারান হারতে হয়েছে বিজেপিকে। কিন্তু কথায় বলে না চোরে না শোনে ধম্মের কাহিনী। এখন সেটাই হচ্ছে। বঙ্গ বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতায় থাকা তাঁদের রাজ্য দফতর ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেন(6 Murlidhar Sen Lane) থেকে স্থানান্তরিত হবে। কিন্তু সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কম খারাপ শুরু বিজেপি কর্মী থেকে নেতাদের যারা মূলত দলের আদি অংশ।
মধ্য কলকাতার মুরলীধর সেন লেনের যে বাড়ি থেকে বিজেপির এ রাজ্যে পথ চলা শুরু হয়েছিল তা দলের অনেক নেতার কাছেই খুবই পয়া আর পবিত্র বলে গণ্য হয়। কেননা এই বাড়িতে একসময় বসতেন বিজেপির আদিপুরুষ তথা জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু সেই বাড়িই এখন ছেড়ে দেওয়ার কথা কার্যত চূড়ান্ত করে ফেলেছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহরও দিয়ে দিয়েছে। তবে বাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হবে না। সেখানে দলের উত্তর কলকাতা জেলার কার্যালয় খোলা হবে। সরে যাবে দলের রাজ্য কার্যালয়। তবে কোথায় যাবে, কবে যাবে সেটা এখনও ঠিক হয়নি। চেষ্টা চলছে ই এম বাইপাসের আশেপাশে কোথাও বাড়ি ভাড়া নিতে। বঙ্গ বিজেপির নেতারা জমি কিনে বহুতল কার্যালয় বানাতে চান। তাতে রাজি নন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেননা বাংলায় আগামী দিনে বিজেপি ঠিক কতটা লাভবান হবে তা নিয়ে হাজারো প্রশ্ন রয়েছে। তাই তাঁরা আপাতত নতুন বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছেন।
একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, হেস্টিংসের দফতর পুরোপুরি তুলে দেওয়া হবে। ওই ১০ তলা বাড়ির বেশ কয়েকটি তল ভাড়া নিয়েছিল বিজেপি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গোহারান হারের পরে সেই বাড়ি রাতারাতি ‘অপয়া’ হয়ে গিয়েছে। তাই সেখানকার ভাড়া নেওয়া তলগুলির বড় অংশই আগে ছেড়ে দিয়েছে পদ্মপার্টি। তবে এখনও পাঁচ তলার হলঘরটি ভাড়া নেওয়া আছে। এবার সেটাও ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে দলের আদিন নেতা থেকে কর্মী সকলেই এখন বলছেন, ২০২৪ এর আগে যেন দফতর ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনের বাড়ি না ছাড়া হয়। এমনিতেই আরএসএসের সমীক্ষায় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত মিলেছে। এখন যদি ‘পয়া’ বাড়িও হাতছাড়া হয় তখন হাতে থাকবে কী! তবে এই সব আবেগ কতখানি শিকঢ়ীন নেতাদের হৃদয় স্পর্শ করতে পারবে তা নিয়ে খটকা থাকছেই।